স্কুলে বানানো হচ্ছিল সাইকেল স্ট্যান্ড। তার জন্য চলছিল মাটি খোঁড়ার কাজ। মাটির স্তূপ একদিকে রাখা ছিল। আর সেই খনন কাজের জায়গায় স্কুলের দুই ছাত্রী লক্ষ্য করে একটি মূর্তি। উৎসাহ, কৌতূহল ভরে সেই মূর্তি দেখেই, তারা ছুটে যায় শিক্ষিকার কাছে। ঘটনা, হুগলির ব্যান্ডেলের হরনাথ নীরোদা সুন্দরী ঘোষ স্কুলের। যে স্কুল থেকে উদ্ধার হওয়া মূর্তি, কয়েক হাজার বছরের পুরনো হতে পারে বলে অনুমান করা হচ্ছে।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক সৈকত দাস জানান, এই মূর্তি উদ্ধার হতেই তাঁরা যোগাযোগ করেন আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার সঙ্গে। প্রতিষ্ঠানের তরফে মূর্তির ছবি দেখতে চাওয়া হয়। তার গুরুত্ব বুঝেই প্রতিষ্ঠান জানিয়ে দেয় মূর্তি রক্ষায় কিছু প্রটোকলের কথা। এদিকে, স্কুলের তরফে অত্যন্ত সন্তর্পণে, গোপনে রক্ষা করা হয় ওই মূর্তি। প্রধান শিক্ষক বলেন,’এটা দুষ্প্রাপ্য ও বহুমূল্য। আমরা স্কুলে মূর্তি রাখিনি, কারণ এখানে আগে ২ বার চুরি হয়েছে। আলাদা ভল্টের ব্যবস্থা করি।’
প্রধান শিক্ষক সৈকত দাস জানান,‘এএসআইয়ের সঙ্গে কথা বলার পর যা জানানো হয়, তাতে এটা সম্ভবত গুপ্তযুগের শুরুর দিকের কোনও ফাইন্ডিং।’ এদিকে, খবর পেতেই এএসআই-র তরফে আধিকারিক সঞ্জয় পাণ্ডা ও প্রদীপ কর হুগলির ওই স্কুলে পৌঁছে যান। তাঁরা বলছেন, ‘এই মূর্তি দেখে মনে হচ্ছে বিষ্ণুমূর্তি।’ তাঁরা বলছেন,’গঙ্গা তীরবর্তী চুঁচুড়া এলাকা পুরাতত্ত্বের দিক থেকে খুবই উচ্চপর্যায়ের জায়গা।’ (ছবিতে এএসআই অফিসাররা)মূর্তি সম্পর্কে বলতে গিয়ে এএসআইয়ের আধিকারিকরা বলছেন,’এই মূর্তি সম্ভবত দশম কিম্বা দ্বাদশ শতকের।’
তাঁরা জানিয়েছেন এই মূর্তি স্যান্ডস্টোনের মূর্তি হতে পারে। এছাড়াও অফিসাররা বলছেন,’চতুর্থ গুপ্তযুগের মূর্তি হতে পারে’ বলে অনুমান এএসআই অফিসারদের। তবে মূর্তি নিয়ে গবেষণা ও তুলনামূলক বিশ্লেষণের পরই এই মূর্তি সম্পর্কে আরও বিশদে জানা যাবে বলে তাঁরা জানিয়েছেন।
আর্কিওলজিস্ট সঞ্জয় পাণ্ডা জানান,’প্রায় হাজার বছরের পুরনো মূর্তি হতে পারে। গঙ্গার গতিপথে এমন অনেক মূর্তি উত্তর ২৪ পরগনাতেও পাওয়া গিয়েছে।’ এদিকে, স্কুলের মধ্যে মাটি খুঁড়ে এমন মূর্তি উদ্ধার ঘিরে স্কুলের গণ্ডি ছাড়িয়ে এলাকায় ব্যাপক শোরগোল পড়ে গিয়েছে।