ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক এই বছর ডিভিডেন্ড বাবদ কেন্দ্রীয় সরকারকে গতবছরের থেকেও বেশি টাকা দিতে পারে বলে দাবি করা হল রিপোর্টে। এর আগে ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে কেন্দ্রীয় সরকারকে ডিভিডেন্ড বাবদ ২.৩০ লাখ কোটি টাকা দিয়েছিল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া এবং অন্যান্য সরকারি আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও ব্যাঙ্কগুলি। আর এবার সরকারকে ২.৫৬ লাখ কোটি দিতে পারে আরবিআই এবং এই প্রতিষ্ঠানগুলি। অবশ্য এবারে এই বেশি ডিভিডেন্ড দেওয়ার নেপথ্যে কারণ হতে পারে ভারতীয় মুদ্রার দরে পতন।
এই নিয়ে আইডিএফসি ফার্স্ট ব্যাঙ্কের মুখ্য অর্থনীতিবিদ গৌড় সেনগুপ্ত এই বিষয়ে টাইমস অফ ইন্ডিয়াকে বলেন, ‘ডলার বিক্রি, বিদেশি সম্পদের ওপর সুদ এবং সরকারি সিকিউরিটিজের কারণেই আরবিআইয়ের ডিভিডেন্ড এতটা হয়েছে।’ রিপোর্ট অনুযায়ী, গত অর্থবর্ষে সরকারের পকেটে যাওয়া ২.৩০ লাখ কোটি ডিভিডেন্ডের মধ্যে থেকে ২.১০ লাখ কোটি দিয়েছিল আরবিআই। ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষের তুলনায় যা কি না দ্বিগুণ ছিল। এদিকে এবারে ২.৫৬ ডিভিডেন্ডের মধ্যে থেকে ৮০ শতাংশই আরবিআই দিতে পারে বলে দাবি করা হয়েছে রিপোর্টে।
এদিকে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ডের রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২৫-২৬ অর্থবর্ষে আরবিআই ডিভিডেন্ড দেশের জিডিপির ০.৭৫ শতাংশ হতে পারে। ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে এই হার ০.৯ শতাংশ ছিল। এই আবহে আবিআই-এর অবদান শতাংশের নিরিখে পতন করবে। উল্লেখ্য, আরবিআই মে-জুন মাসে এই ডিভিডেন্ড সরকারকে দিয়ে থাকে। তাই সরকারের পরের বছরের অ্যাকাউন্টে তা প্রতিফলিত হয়ে থাকে।
এদিকে কেন্দ্রীয় বাজেটে এই অর্থবর্ষে কেন্দ্রীয় সরকারের রাজস্ব ঘাটতির পরিমাণ মোট জিডিপির ৪.৪ শতাংশে রাখার লক্ষ্য স্থির করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। এই পরিস্থিতিতে আরবিআই যদি কেন্দ্রীয় সরকারকে ২ লাখ কোটি টাকার ওপরে ডিভিডেন্ড দেয়, তাহলে সরকার তাদের রাজস্ব ঘাটতি পূরণের লক্ষ্যে অনেকটাই এগিয়ে যেতে পারবে বলে মনে করা হচ্ছে। উল্লেখ্য, আরবিআই প্রতি বছর কেন্দ্রীয় সরকারকে তাদের লভ্যাংশের টাকা দিয়ে থাকে। মোট ব্যালেন্স শিটের ৫.৫ থেকে ৬.৫ শতাংশ টাকা রেখে বাকিটা সরকারকে দিয়ে দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক। আরবিআই যে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিবিয়োগ করে, হাতে থাকা ডলারের মূল্য পরিবর্তন, টাকা ছাপানোর ফি সহ বিভিন্ন ভাবে আয় হয় আরবিআই-এর। সেই টাকাই সরকারের হাতে তুলে দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক। ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতির জন্য ব্যালেন্স শিটের ৫.৫ থেকে ৬.৫ শতাংশ টাকা আপতকালীন তহবিল হিসেবে রেখে দেয় আরবিআই।