শুল্ক জুজু, আর্থিক অনিশ্চয়তার মাঝেই ঋণগ্রহীতাদের জন্য স্বস্তির খবর শোনালেন আরবিআই গভর্নর সঞ্জয় মলহোত্রা। মনেটারি পলিসি কমিটির বৈঠকের পর আজ রেপো রেট কমানোর ঘোষণা করলেন রিজার্ভ ব্যাঙ্কের প্রধান। এর ফলে ঋণ নিলে ইএমআই পরিশোধের ক্ষেত্রে স্বস্তি পেতে পারেন আম জনতা। এই নিয়ে টানা দ্বিতীয় দফায় রেপো রেট কমানোর সিদ্ধান্ত নেয় আরবিআই। মনেটরি পলিসির বৈঠক শেষে আজ আরবিআই গভর্নর জানান, মনেটারি পলিসি কমিটির বৈঠকে রেপো রেট কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। গত ৭ তারিখ থেকে আজ, ৯ এপ্রিল পর্যন্ত চলে মনেটারি পলিসি কমিটির বৈঠক।
এর আগে রেপো রেট ছিল ৬.২৫ শতাংশ। তবে আজ আরবিআই গভর্নর জানিয়েছেন, এবার রেপো রেট ২৫ বেসিস পয়েন্ট বা ০.২৫ শতাংশ কমানো হচ্ছে। এর ফলে নয়া রেপো রেট হতে চলেছে ৬ শতাংশ। প্রসঙ্গত, মনেটার পলিসি কমিটিতে ৬ সদস্য আছেন। তাঁর মধ্যে তিনজন হলেন আরবিআই সদস্য এবং তিনজন বাইরের। সদ্য সমাপ্ত বৈঠকে এই ৬ সদস্যই রেপো রেট কমানোর পক্ষে ভোট দেন। এর আগে গত ফেব্রুয়ারি মাসে রেপো রেট ০.২৫ শতাংশ কমিয়ে ৬.৫ থেকে ৬.২৫ শতাংশ করা হয়েছিল।
এদিকে আরবিআই গভর্নর জানান, ২০২৫-২৬ অর্থবর্ষে সার্বিক ভাবে ভারতের রিয়েল জিডিপি থাকবে ৬.৫ শতাংশ। প্রথম কোয়ার্টারে তা থাকবে ৬.৫ শতাংশ, দ্বিতীয় কোয়ার্টারে ৬.৭ শতাংশ, তৃতীয় কোয়ার্টারে ৬.৬ শতাংশ এবং চতুর্থ কোয়ার্টারে ৬.৩ শতাংশ। এদিকে সঞ্জয় দাবি করেন, তারা যতটা আশা করেছিলেন, তার থেকে বেশি দ্রুত খাদ্যপণ্যের দাম কমেছে। এদিকে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে অনিশ্চয়তার বিষয়টির ওপর আরবিআই নজর রাখছে বলে আজ জানান তিনি।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালের এপ্রিল থেকে ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ধাপে ধাপে রেপো রেট বাড়িয়েছিল আরবিআই। তবে ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে লাগাতার ১০ দফায় রেপো রেট অপরিবর্তিত রাখা হয়েছিল। আর ২ বছর পর ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে রেপো রেট কমানোর বড় ঘোষণা করেছিলেন আরবিআই প্রধান সঞ্জয় মলহোত্রা। আর এবারেও রেপো রেট কমানো হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছিল। সেই জল্পনাকে সত্যি প্রমাণিত করে আরবিআই গভর্নর রেপো রেট সংক্রান্ত ঘোষণা করেন।
এই আবহে ব্যাঙ্কগুলি এবার ফিক্সড ডিপোজিটে সুদের হার কমিয়ে দিতে পারে সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। এই আবহে যারা বিনিয়োগের মাধ্যমে আর্থিক নিশ্চয়তা চান, তাঁরা ব্যাঙ্কগুলির সুদের হার পরিবর্তনের আগেই যেন ফিক্সড ডিপোজিটে টাকা রেখে ‘লক ইন’ করেন। এদিকে বিভিন্ন মেয়াদের ফিক্সড ডিপোজিটে নিজের অর্থ সঞ্চয় করতে পারেন, তাতে সুদের হারে পতনের প্রভাব কিছুটা হলেও কমবে। আর যাদের আগের থেকে ফিক্সড ডিপোজিটে টাকা নির্দিষ্ট সুদে ‘লক’ করা আছে, এবং তাঁরা এফডি-তেই টাকা রাখতে ইচ্ছুক, তাহলে তাঁদের কিছু করতে হবে না।