নির্ভয়াকাণ্ডে দোষীর ফাঁসি পিছোতে করেছিলেন আবেদন, বিকাশের বদলে আরজি কর কাণ্ডে নির্যাতিতার হয়ে লড়বেন সেই বৃন্দা। আগামী সোমবার সুপ্রিম কোর্টে তিলোত্তমা কাণ্ডের পরবর্তী শুনানি। সেই শুনানিতেই নিহত চিকিৎসকের পরিবারের হয়ে সওয়াল করতে দেখা যাবে বৃন্দা গ্রোভারকে। এই মামলা লড়ার জন্য তিলোত্তমার মা-বাবার কাজ থেকে এক টাকাও পারিশ্রমিক নেবেন না।
এই বৃন্দা গ্রোভার ২০২০ সালে দিল্লির নির্ভয়া কেসে আসামীর ফাঁসি পিছিয়ে দিতে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছিলেন আইনের দোহাই দিয়ে। নিজের দীর্ঘ কর্মজীবনে একাধিক মানবাধিকার সংক্রান্ত এবং মহিলা-শিশুদের বিরুদ্ধে হওয়া নির্যাতনের মামলায় লড়েছেন তিনি। রাষ্ট্রসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের সদস্যও ছিলেন তিনি। ১৯৮৭ সালের হাসিমপুরা পুলিশ হত্যা মামলা, ২০০৪ সালের ইসরাত জাহান মামলা, ২০০৮ সালে কাঁধামালে খ্রিস্টান বিরোধী দাঙ্গা মামলাতে লড়েছেন তিনি। পকসো বিলের সংশোধনীর খসড়া তৈরিতে তাঁর বিশেষ অবদান রয়েছে।
উল্লেখ্য, চিকিৎসকদের পক্ষে গত শুনানিতে ইন্দিরা জয়সিং জোরালো সওয়াল করছিলেন। তা দেখেই নাকি নির্যাতিতা চিকিৎসকের পরিবারের তরফ থেকে বৃন্দা গ্রোভারকে নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এদিকে দাবি করা হয়, বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যের পক্ষে নাকি বারবর দিল্লি গিয়ে মামলা লড়া কঠিন হয়ে পড়ছিল। তিনিও বিা পারিশ্রমিকেই নির্যাতিতার পরিবারের হয়ে সওয়াল করেছিলেন সুপ্রিম কোর্টে।
এদিকে সুপ্রিম কোর্টে পিছিয়ে গিয়েছে আরজি কর কাণ্ডের মামলার পরবর্তী শুনানি। ২৭ সেপ্টেম্বর সেই শুনানি হওয়ার কথা ছিল। তবে তার বদলে এবার আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর সুপ্রিম কোর্টে উঠবে আরজি কর মামলাটি। শুনানি পিছোতে আগেই আবেদন করেছিল রাজ্য। সেই আবেদনে মতোই পিছিয়েছে আরজি কর মামলার শুনানি।
এর আগের দিন আরজি কর কাণ্ডের শুনানির সময় প্রধান বিচারপতি বলেছিলেন, ‘আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনার তদন্ত নিয়ে নির্যাতিতার বাবা যে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, তা প্রকৃত। তিনি যে চিঠি দিয়েছেন, সেটা আমরা সামনে আনব না। কারণ সেটা গোপনীয়। আমরা বলতে চাই যে সিবিআইয়ের জন্য এগুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য।’
এদিকে সিবিআই যে স্টেটাস রিপোর্ট আদালতে পেশ করেছে, তা নিয়ে প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড় বলেছেন, ‘সিবিআই কী তদন্ত করছে, সেটা যদি আজই সামনে আনা হয়, তাহলে পুরো প্রক্রিয়াটা ঘেঁটে যাবে। সত্যের উদঘাটনের জন্য সিবিআই যে পন্থা নিয়েছে, সেটা ঘেঁটে যাবে। টালা থানার তৎকালীন ওসিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আমরা সিবিআইয়ের স্টেটাস রিপোর্ট দেখেছি। আমরা যে যে বিষয়গুলির উত্থাপন করেছিলাম, সেটার জবাব দিয়েছে সিবিআই। চালান দেওয়া হয়েছিল কিনা, ময়নাতদন্তের প্রক্রিয়া কীরকম ছিল, তথ্যপ্রমাণ নষ্ট করা হয়েছে কিনা – সেই প্রশ্নের উত্তর দিয়েছে সিবিআই। সিবিআইকে পর্যাপ্ত সময় দিতে হবে আমাদের।’