নারায়ণগঞ্জ ও ময়মনসিংহ থেকে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির (আরসা) একজন শীর্ষ নেতা সহ ১০ জনকে গ্রেফতার করল বাংলাদেশের র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। ধৃতদের মধ্যে রয়েছেন আরসা প্রধান আতাউল্লাহ আবু আম্মার জুনুনি ওরফে আতাউল্লাহ। জানা যাচ্ছে, মঙ্গলবার র্যাব-১১’ এর একটি দল তিনটি আলাদা আলাদা জায়গায় অভিযান চালিয়ে এই সাফল্য পেয়েছে। ধৃতদের বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে এবং অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে দুটি মামলা দায়ের হয়েছে।
গ্রেফতারের পর ধৃতদের নারায়ণগঞ্জ আদালতে তোলা হয়। সেখানে তাদের ২০ দিনের হেফাজতে চেয়ে আবেদন করে পুলিশ। যদিও আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মঈনুদ্দিন কাদির ধৃত ৬ জনের ১০ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন। জানা গিয়েছে, হিন্দুদের উপর নির্যাতনের জন্য কুখ্যাত এই জঙ্গি নেতা আতাউল্লাহ। পাকিস্তানের করাচিতে তাঁর জন্ম। পরে পরিবারের সঙ্গে তিনি আরবে চলে যান। সেখানে আরবি ভাষায় তাঁর পড়াশোনা। এর পরে তিনি জঙ্গি সংগঠনের সংস্পর্শে আসেন। পাকিস্তানের ফিরে জিহাদি জঙ্গিদের কাছে প্রশিক্ষণ শুরু করেন। পরে লিবিয়ায় গিয়ে আরও উন্নত প্রশিক্ষণ নেন। প্রশিক্ষণ শেষে পাকিস্তানের গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই তাঁকে মায়ানমানের রাখাইন প্রদেশে পাঠায়। সেখানে তাঁকে এই জঙ্গি সংগঠনের প্রধান করা হয়। জানা যাচ্ছে, রাখাইনের ভারতীয় বংশোদ্ভুত নাগরিক এবং হিন্দুদের উপর নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে এই জঙ্গি নেতার বিরুদ্ধে।
বাংলদেশের সংবাদমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, মঙ্গলবার রাজধানী ঢাকা এবং উত্তর ময়মনসিংহ জেলার উপকণ্ঠে রাতভর অভিযান চালিয়ে আরসার এই ১০ জন সদস্যকে গ্রেফতার করে র্যাব। বাংলাদেশের আধিকারিকদের অনুমান, আরসা বাংলাদেশের ভূখণ্ডে নাশকতা চালানোর ষড়যন্ত্র করছিল। ধৃতদের কাছ থেকে নগদ ২১ লক্ষ টাকা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। ধৃতদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের সন্ত্রাসবিরোধী আইন এবং অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে মামলা দায়ের করেছে। তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালে রোহিঙ্গা শিবিরের ভিতরে ঢুকে রোহিঙ্গা শান্তিকর্মী মহিব উল্লাহকে হত্যা করা হয়েছিল। সেই হত্যার নির্দেশ দিয়েছিলেন আতাউল্লাহ। এছাড়াও, দক্ষিণ-পূর্ব কক্সবাজারে ডিরেক্টরেট জেনারেল অফ ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স (ডিজিএফআই)-এর কর্মকর্তা স্কোয়াড্রন লিডার রিজওয়ান রুশদী হত্যার মূল অভিযুক্ত এই আতাউল্লাহ। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের মধ্যে বাকি চারজন হলেন মহিলা ও শিশু। ফলে তাদের হেফাজতে রাখার আর্জি জানানো হয়নি।