জেলে টাকা দেওয়া হবে সঞ্জয় রায়কে। তবে সেই টাকা পাওয়ার জন্য আরজি কর মামলায় সাজাপ্রাপ্তকে প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারে কাজ করতে হবে। কাজের পরিবর্তে মিলবে টাকা। প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারের এক আধিকারিককে উদ্ধৃত করে সংবাদসংস্থা পিটিআইয়ের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, প্রাথমিকভাবে সম্ভবত মালি হিসেবে কাজ করবে সঞ্জয়। প্রশিক্ষণের পরে কলকাতা পুলিশের প্রাক্তন সিভিক ভলান্টিয়ারকে জামাকাপড়, কাঠ, বাসন তৈরি বা কোনও জিনিসপত্র তৈরির কাজে কাজে লাগানো হবে বলে জানিয়েছেন ওই আধিকারিক।
আর সঞ্জয়কে যে কাজ করতে হবে, তা সাজা ঘোষণার সময়ই জানিয়ে দিয়েছে শিয়ালদা আদালত। ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ৬৪ ধারার আওতায় সশ্রম যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আর ৬৬ ধারার আওতায় সশ্রম ও আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়েছে শিয়ালদা আদালত। তাকে প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারে রাখা হয়েছে। সেখানেই তাকে কাজ করতে হবে।
রান্না করতে না পারলে বাসন ধুতে হবে সঞ্জয়কে
বিষয়টি নিয়ে প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারের এক আধিকারিক বলেছেন, ‘সংশোধনাগারে প্রত্যেক বন্দীকে কিছু না কিছু করতে হয়। সঞ্জয় অদক্ষ। কিন্তু ওকে আমাদের এমন কাজে রাখতে হবে, যাতে কায়িক পরিশ্রম করতে হবে। তাই আপাতত ওকে হয়তো বাগান পরিচর্যার কাজে রাখা হবে। এক থেকে দু’দিনের মধ্যে সঞ্জয়ের কাজ শুরু হয়ে যাবে।’
তিনি আরও জানিয়েছেন, সঞ্জয়কে সংশোধনাগারের রান্নাঘরেও কাজ করানো হতে পারে। ওই আধিকারিকের কথায়, ‘ও যদি কাজ করতে না পারে, তাহলে ওকে খাবার দিতে এবং বাসন পরিষ্কার করতে বলা হবে। কে কী কাজ করবে, সেটা প্রতিদিন সকালে বা সপ্তাহের শুরুতেই ঠিক করা হয়।’ সেইসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, আর পাঁচজন বন্দীর মতো সঞ্জয় কী কী কাজ করেছে, তা জেলের খাতায় লিখে রাখা হবে।
আর সেই কাজের জন্য কত টাকা পাবে সঞ্জয়?
ওই আধিকারিক জানিয়েছেন, সংশোধনাগারে অদক্ষ কর্মী (বন্দী) দৈনিক মজুরি হিসেবে ১০৫ টাকা পায়। আংশিকভাবে দক্ষ কর্মীদের দৈনিক ১২০ টাকা দেওয়া হয়। আর দক্ষ কর্মীদের দৈনিক দেওয়া হয় ১৩৫ টাকা। আর সেই মজুরির টাকা রাজ্য কারা দফতরের নিয়ন্ত্রিত অ্যাকাউন্টে পাঠিয়ে দেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারের ওই আধিকারিক।
সঞ্জয়ের ফাঁসি চেয়ে হাইকোর্টে যাচ্ছে সিবিআই
তারইমধ্যে সঞ্জয়ের ফাঁসি চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টে যাচ্ছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। আরজি কর ধর্ষণ ও খুনের মামলায় তাকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করতে চলেছে সিবিআই। আধিকারিকরা জানিয়েছেন, বিস্তারিতভাবে নিজেদের যুক্তি তৈরি করে শিয়ালদা আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে যত দ্রুত সম্ভব হাইকোর্টে মামলা করা হবে। সিবিআই যে আইনি পরামর্শ পেয়েছে, তাতে আরজি করের ঘটনাকে ‘বিরল থেকে বিরলতম’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।