আবারও বিতর্কে নদিয়ার শান্তিপুর রাজ্য সাধারণ হাসপাতাল। এবার তাদের বিরুদ্ধে আরও গুরুতর অভিযোগ উঠল। হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে আসা এক রোগীর দাবি, তাঁকে হাসপাতাল থেকে যে ওষুধ দেওয়া হয়েছে, তা আদতে মেয়াদ উত্তীর্ণ! এই ঘটনায় সরাসরি স্বাস্থ্য দফতরের কাছে অভিযোগ জানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ওই ব্যক্তি।
ঘটনা প্রসঙ্গ জানা গিয়েছে, শনিবার এই হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে এসেছিলেন রাজু ভৌমিক নামে এক রোগী। তিনি শান্তিপুর থানা এলাকার হরিপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের পালপাড়ার বাসিন্দা। রাজুর দাবি, গত কয়েক দিন ধরেই দাঁতের সমস্য়ায় ভুগছেন তিনি। সেই কারণেই গিয়েছিলেন হাসপাতালে।
শনিবার হাসপাতালের সরকারি চিকিৎসক তাঁর দাঁত দেখে ওষুধ লিখে দেন। হাসপাতালেরই ন্যায্য মূল্যের ওষুধের দোকান থেকে সেই প্রেসক্রিপশন অনুসারে ওষুধ কেনেন রাজু। কিন্তু, বাড়ি ফিরে যখন তিনি সেই ওষুধ খেতে যান, তখনই চক্ষু চড়কগাছ হয়ে যায়। রাজু দেখেন, তাঁর ন্যায্য মূল্যে কেনা ওষুধের মেয়াদ (ওষুধ ব্যবহার করার নির্দিষ্ট সময়সীমা) আগেই ফুরিয়ে গিয়েছে।
যার অর্থ হল – সরকারি হাসপাতালের দোকানেই মেয়াদ উত্তীর্ণ ওষুধ বিক্রি করা হচ্ছে! এই ঘটনা সামনে আসতেই হাসপাতালের রোগীদের মধ্যে আশঙ্কা আর আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। তাঁদের বক্তব্য, যাঁরা সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে আসেন, তাঁদের মধ্যে অধিকাংশই নিম্নবিত্ত। দামি ওষুধ বাইরে থেকে কেনার ক্ষমতা তাঁদের নেই। সেখানে ন্যায্য মূল্যের সরকারি ওষুধের দোকান তাঁদের কাছে বড় ভরসার জায়গা। আর সেখানেই যদি এত বড় গলদ থাকে, তাহলে এই মানুষগুলো কোথায় যাবে? নিজেদের চিকিৎসার জন্য কাকে ভরসা করবে?
রাজু ভৌমিক এই ঘটনার প্রমাণ স্বরূপ হাসপাতালের প্রেসক্রিপশন থেকে শুরু করে ন্য়ায্য়মূল্যের ওষুধের দোকানের নথি ও মেয়াদ উত্তীর্ণ ওষুধ – সবকিছুর ছবি তুলে রেখেছেন। তাঁর সাফ কথা, তিনি রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের কাছে এর বিহিত চেয়ে অভিযোগ জানাবেন।
উল্লেখ্য, এর আগে এই হাসাপাতালেরই জরুরি বিভাগের ভিতর ৫ বছরের একটি শিশু বমি করে ফেলায় তাঁর বাবাকে দিয়ে সেই বমি পরিষ্কার করান কর্তব্যরত চিকিৎসক। ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই সমালোচনার ঝড় ওঠে। বিষয়টি নিয়ে কঠোর অবস্থান নেয় রাজ্য প্রশাসনও।
শেষ পাওয়া খবর অনুসারে, শান্তিপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ছোট্ট রোগীর বাবাকে দিয়ে বমি পরিষ্কার করানোর ঘটনায় রিপোর্ট তলব করেছে স্বাস্থ্যভবন। গঠন করা হয়েছে তদন্ত কমিটি। একইসঙ্গে, অভিযুক্ত চিকিৎসককে শোকজও করা হয়েছে।