আগেরবার ইদের শুভেচ্ছা জানাতে যে পোস্ট করেছিলেন, সেটা দিয়েই মিথ্যে প্রচার করা হচ্ছিল। ওই ভিডিয়ো দেখিয়ে দাবি করা হচ্ছিল, মহম্মদ শামি নাকি বলেছেন যে ‘(আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি সেমিফাইনালের দিন) আমি রোজা ভেঙেছিলাম। দয়া করে আমায় ভুল বুঝবেন না মুসলিম ভাই-বোনরা। আমি ইচ্ছা করে সেই কাজটা করিনি। রোজা ভাঙার জন্য আমার জোর করা হয়েছিল। নাহলে আমার কেরিয়ার নষ্ট করে দিত ওরা। আমি আমার মুসলিম ভাই-বোনদের থেকে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।’
AI দিয়ে অন্য অডিয়ো যোগ করে ভিডিয়ো ছড়ানো হয়!
কিন্তু শামি আদতে ওরকম কোনও কথা বলেননি। যে ভিডিয়ো পোস্ট করে দাবি করা হচ্ছে যে শামি সেই মন্তব্য করেছেন, তা আসলে ৪৮ সপ্তাহ আগেকার দৃশ্য। গত বছর ইদে শুভেচ্ছা জানিয়ে ভিডিয়ো পোস্ট করেছিলেন শামি। আর সেই ভিডিয়োটা কিছুটা এডিট করে, শামির পোশাকের রংটা কিছুটা অন্যরকম করে এবং জুম করে ভারতীয় তারকা পেসারের মুখে সেইসব কথা বসিয়ে দেওয়া হয়েছে। আর ওই বিকৃত ভিডিয়োটা ভালোভাবে দেখলেই বোঝা যাচ্ছিল যে শামির ঠোঁট যেভাবে নড়ছে, সেটার সঙ্গে কথার কোনও মিল নেই।
এরকমভাবে হামেশাই ভিডিয়ো ছড়ানো হয়!
নেটিজেনদের মতে, আর্টিফিসিয়াল ইনটেলিজেন্স বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে কোনও তারকার কণ্ঠস্বরের আদলে ভিডিয়ো বানানো কোনও ব্যাপারই নয়। সোশ্যাল মিডিয়ায় হামেশাই সেই দৃশ্য দেখা যায়। রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলি থেকে শুরু করে মহেন্দ্র সিং ধোনিদের গলার আদলে সেরকম ভিডিয়ো তৈরি করা হয়। আর এমন এমন সব অডিয়ো যোগ করা হয়, যেগুলিতে আষ্টেপৃষ্টে বিতর্ক লেগে থাকে। শামির ক্ষেত্রেও ঠিক সেই কাজটা করা হয়েছে বলে মনে করছেন নেটিজেনরা।
সেই বিকৃত ভিডিয়ো বা তাঁর রোজা না রাখা নিয়ে একটা অংশের তরফে যে হইচই করা হচ্ছিল, তা নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি শামি। আসলে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেমিফাইনালের মধ্যেই মাঠে তাঁকে এনার্জি ড্রিঙ্ক পান করতে দেখা গিয়েছিল। তারপর একটি অংশের তরফে দাবি করা হচ্ছিল যে রমজান মাসে রোজা না রেখে ‘অপরাধ’ করেছেন শামি।
শামিকে ‘অপরাধী’ বলেছিলেন মৌলানা, পালটা দিয়েছেন অনেকে!
অল ইন্ডিয়া মুসলিম জামাতের সভাপতি মৌলানা শাহাবুদ্দিন রাজভি বরেইলভি দাবি করেন, ‘রোজা পালন না করে উনি (শামি) অপরাধ করেছেন। ওঁনার এরকম কাজ করা উচিত হয়নি। শরিয়তের চোখে উনি একজন অপরাধী। ওঁনাকে আল্লাহের কাছে জবাব দিতে হবে।’ সেইসঙ্গে তিনি বলেন, ‘(মুসলিমদের) অন্যতম বাধ্যতামূলক কাজ হল রোজা পালন করা। যদি কোনও সুস্থ-স্বাভাবিক পুরুষ বা মহিলা রোজা না রাখেন, তাহলে তাঁকে বড় অপরাধী বলে বিবেচনা করা হবে।’
যদিও অনেকেই শামির পাশে দাঁড়ান। অল ইন্ডিয়া ইমাম অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সাজিদ রশিদি বলেন, ‘যাঁদের ধর্ম নিয়ে কোনও ধারণা নেই, তাঁরা এরকম কথা বলেন। যদি কোনও সমস্যা থাকে, তাহলে ইসলামে কোনও সফরকারীকে রোজা পালন না করার অনুমতি দেওয়া আছে। তাছাড়া কাউকে অপরাধী হিসেবে দাগিয়ে দেওয়ার কোনও অধিকার নেই কারও।’ একইভাবে শামির হয়ে সওয়াল করেন অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ডের এক্সিকিউটিভ সদস্য মৌলানা খালিদ ফারাঙ্গি মাহালি।