ফের বিতর্কে যোগগুরু রামদেব। সৌজন্য়ে তাঁর ‘শরবত জিহাদ’ মন্তব্য। বাবা রামদেবের দাবি, ভারতে নাকি কোনও এক শরবত প্রস্তুতকারী ও বিপণন সংস্থা এই শরবত জিহাদ শুরু করেছে। কারণ, তারা যে শরবত বাজারে বিক্রি করছে, সেই লাভের টাকা দিয়েই ভারতে মাদ্রাসা ও মসজিদ নির্মাণ করছে!
অর্থাৎ – বাবাজির বক্তব্য হল, আমজনতা যদি সেই শরবত খায়, তাহলে ভারতে মসজিদ ও মাদ্রাসার সংখ্য়া বাড়বে। তার বদলে তারা যদি পতঞ্জলী সংস্থার তৈরি, যা কিনা যোগগুরুর নিজের সংস্থা, তাদের শরবত খায়, তাহলে মাদ্রাসার বদলে ভারতে গুরুকুল, আচার্যকুল এবং পতঞ্জলী বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি হবে!
বাবাজির এই ভিডিয়ো বার্তা ইতিমধ্য়েই সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। নেট নাগরিকদের একটা বড় অংশই রামদেবের এমন বক্তব্যের সমালোচনা করেছেন। অনেকে আবার বলছেন, হয়তো পতঞ্জলীর ব্যবসা তেমন চলছে না। সেই কারণেই বাবাজি এসব বলছেন! কারও মতে, তিনি বাবাজি, তাই তিনি সবই বলতে পারেন! কেউ আবার কমেন্ট করেছেন, আরে বাবাজিকে কেউ তো থামাও!
প্রসঙ্গত, যে ভাইরাল ভিডিয়ো নিয়ে এত কাণ্ড, সেটি প্রথম সোশাল মিডিয়ায় – অর্থাৎ – ফেসবুকে পোস্ট করা হয়েছিল ‘পতঞ্জলী প্রোডাক্টস’ নামক পেজ থেকে। তাতে হিন্দি হরফে ক্যাপশনও লেখা ছিল। যার অর্থ হল – ‘শরবত জিহাদ এবং কোল্ড ড্রিঙ্কসের নামে যে সমস্ত বিষ ও টয়লেট ক্লিনার বিক্রি করা হচ্ছে, তার হাত থেকে আপনার পরিবার ও নিরপরাধ শিশুদের বাঁচান। বাড়িতে কেবলমাত্র পতঞ্জলীর তৈরি শরবত আর জুস নিয়ে আসুন।’
এই ভিডিয়োয় রামদেবকে বলতে শোনা যায়, ‘গরমের হাত থেকে মুক্তি পেতে মানুষ ঠান্ডা পানীয়ের নামে যা কিছু পান করছেন, সে সবই আসলে টয়লেট ক্লিনার (শৌচালয় পরিষ্কার করার সামগ্রী)। একদিকে রয়েছে – টয়লেট ক্লিনারের মতো বিষের হামলা, আর অন্যদিকে রয়েছে – একটি সংস্থা, যারা শরবত বিক্রি করে। তারা তাদের উপার্জনের অর্থে মসজিদ ও মাদ্রাসা তৈরি করছে। ঠিক আছে। সেটা তাদের ধর্ম।’
তথ্যাভিজ্ঞ মহল বলছে – এক্ষেত্রে রামদেব আসলে বহু দিনের পুরোনো সংস্থা – হামদর্দ-কে নিশানা করতে চেয়েছেন। ভারতের বাজারে তাদের তৈরি – রুহ আফজা – বহু দশক ধরে বিক্রি হয়ে আসছে। সেই টাকা দিয়েই মাদ্রাসা ও মসজিদ তৈরি হচ্ছে বলে দাবি করেছেন রামদেব।
এরপরই বাবাজি বলেন, আমজনতা যদি কেবলমাত্র পতঞ্জলীর তৈরি শরবত খায়, তাহলে আর মসজিদ, মাদ্রাসা তৈরি হবে না। বদলে পতঞ্জলী বিশ্ববিদ্যালয় ও ভারতীয় শিক্ষা বোর্ড নির্মিত হবে।
বাবাজি আরও বলেছেন, ‘আপনি যদি ওই সংস্থার শরবত খান, তাহলে আপনি মসজিদ ও মাদ্রাসা নির্মাণে সরাসরি সহযোগিতা করবেন।… আমি তাই বলছি, যেমন লাভ জিহাদ, ভোট জিহাদ হয়, তেমনই শরবত জিহাদও চলছে। তাই আপনাকে নিজেকে এই শরবত জিহাদের হাত থেকে রক্ষা করতেই হবে।’
ফেসবুকে এই ভিডিয়োটি ইতিমধ্য়েই ৩৭ মিলিয়ন ‘ভিউ’ পেয়েছে। কিন্তু, যাঁরা সেখানে কমেন্ট করেছেন, তাঁদের অধিকাংশের লেখাতেই দেখা গিয়েছে সমালোচনা, ব্যঙ্গ। একজনের কথায় – ‘ওঁর ব্যবসা পড়ছে। তাই নতুন পণ্য বাজারে এনেছেন।’