SSC Tainted and Untainted Candidates: সকলকে বেতন ফেরাতে বলেনি! তাও কেন যোগ্য-অযোগ্যদের আলাদা করা গেল না?

Spread the love

যোগ্য ও অযোগ্য প্রার্থীদের কেন আলাদা করা হল না? সুপ্রিম কোর্ট যখন বলেছে যে ‘শুধুমাত্র অযোগ্যদের টাকা ফেরত দিতে হবে’ এবং তাঁরা নয়া নিয়োগ প্রক্রিয়া অংশগ্রহণ করতে পারবেন না, তখন তো যোগ্য কারা, সেটাও বোঝা গিয়েছে’, তাহলে কেন সব প্রার্থীদের চাকরি বাতিল করা হল? কেন বাতিল করা হয় পুরো প্যানেল? বৃহস্পতিবার স্কুল সার্ভিস কমিশনের (এসএসসি) নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরে এমনই সব প্রশ্ন উঠে আসছে। আর সেটা কেন হল, তার আইনি ব্যাখ্যা দিয়েছেন আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য এবং আইনজীবী ফিরদৌস শামিম।

কাদের ‘অযোগ্য’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে?

ফিরদৌস জানিয়েছেন, ঠিক কতজন কারচুপি করে ২০১৬ সালের এসএসসি নিয়োগ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে চাকরি পেয়েছিলেন, তা স্পষ্ট নয়। সুপ্রিম কোর্টের রায়ের কপিতে ‘অযোগ্য’ হিসেবে তাঁদেরই চিহ্নিত করা হয়েছে, যাঁরা প্রশ্নাতীতভাবে জালিয়াতি করেই চাকরি পেয়েছিলেন। কিন্তু চিহ্নিত সংখ্যার বাইরেও অযোগ্য প্রার্থী আছেন বলে দাবি করেছেন ফিরদৌস।

‘অযোগ্য’ প্রার্থীদের ৩টি ক্যাটেগরি, দাবি ফিরদৌসের

বিষয়টি আরও ব্যাখ্যা করে তিনি জানিয়েছেন, তিনটি ক্যাটেগরির আওতায় অযোগ্য প্রার্থীকে চিহ্নিত করা হয়েছে। প্রথমত, প্যানেলভুক্ত না থাকা সত্ত্বেও নিয়োগ করা হয়েছিল। দ্বিতীয়ত, ‘র‍্যাঙ্ক জাম্প’ করা হয়েছিল একাধিক প্রার্থীর। তৃতীয়ত, ওএমআর শিটে কারচুপি করা হয়েছিল। যে ওএমআর শিটের ডিজিটাল কপি রাখেনি কমিশন।

আরও বেশি অযোগ্য প্রার্থী রয়ে গিয়েছেন, মত ফিরদৌসের

তবে বিষয়টা সেখানেই শেষ হয়নি। তিনি জানিয়েছেন, সংরক্ষণের নীতি না মেনে কতজন চাকরি পেয়েছেন, নির্দিষ্ট অনুপাত বজায় না রেখে কতজনকে চাকরি দেওয়া হয়েছে, সেটা জানায়নি কমিশন। এমনকী লিখিতভাবে সিবিআই জানায়, যে ইন্টারভিউ প্রক্রিয়ায় নম্বরেও হেরফের করা হয়েছিল। সেই পরিস্থিতিতে প্রশ্নাতীতভাবে চিহ্নিত সংখ্যার বাইরেও যে অযোগ্য প্রার্থী রয়ে গিয়েছেন, তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই বলে দাবি করেছেন ফিরদৌস।

তাঁর বক্তব্য, কতজন বেআইনিভাবে চাকরি পেয়েছিলেন, তা নিয়ে ঠিকমতো কোনও সংখ্যা পেশ করা হয়নি। সেটা সুর্নিদিষ্ট করতে নেওয়া হয়নি কোনও ব্যবস্থা। কমিশন, মধ্যশিক্ষা পর্ষদ এবং রাজ্য সরকার তিন রকম সংখ্যা পেশ করেছে। তিনটি পক্ষের তরফে তিন রকমের সংখ্যা দেওয়া হয়। সংখ্যার পার্থক্য থেকে যাচ্ছিল। যদি সঠিকভাবে বৈধ এবং অবৈধ প্রার্থীদের চিহ্নিত করা হত, তাহলে সাদা ও কালোর মধ্যে পুরোপুরি পৃথকীকরণ করা যেত।

একইসুরে বর্ষীয়ান আইনজীবী তথা একাধিক চাকরিপ্রার্থীর আইনজীবী জানিয়েছেন, ২০১৬ সালের পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়াকে কলুষিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। এমনই পরিস্থিতি হয়েছিল যে কে যোগ্য প্রার্থী, কে অযোগ্য প্রার্থী, সেটা নির্ধারণ করা সম্ভব হয়নি। আর তাই পুরো প্যানেল বাতিল করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিকাশ।

যোগ্য ও অযোগ্য প্রার্থী নিয়ে কী বলল সুপ্রিম কোর্ট?

আর পুরো প্যানেল কেন বাতিল করা হচ্ছে, সেটার ব্যাখ্যা রায়ের কপিতেও দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। একাধিক মামলার পর্যবেক্ষণ উল্লেখ করেছে, যেখানে বলা হয়েছে যে যদি অযোগ্য প্রার্থীদের থেকে যোগ্য প্রার্থীদের বাছাই করা সম্ভব নয়, তাহলে পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল করা উচিত নয়। কিন্তু যেখানে বৃহদাকারে কারচুপি হয়েছে এবং পুরো প্রক্রিয়ার বিশ্বাসযোগ্যতা উঠে যায়, সেখানে পুরো প্যানেল বাতিল করা ছাড়া কোনও সুযোগ থাকে না।

২০১৬ সালের এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি মামলার ক্ষেত্রে যে সেরকমই হয়েছে, সেরকমই ইঙ্গিত দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, এটা এমন একটা মামলা, যেখানে পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়া কলঙ্কিত। এতটাই দুর্নীতি হয়েছে যে সেটা ঠিক করারও ঊর্ধ্বে উঠে গিয়েছে। বৃহাদাকারে জালিয়াতি এবং কারচুপি করা হয়েছে। তারপর সেটাকে ধামাচাপা দেওয়ার যে চেষ্টা করা হয়েছে, তা শুধরে ফেলার গণ্ডিও পার করে গিয়েছে। পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়ার বৈধতা এবং বিশ্বাসযোগ্যতা ক্ষুণ্ণ হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *