শুধুমাত্র এক প্লেট দই বড়া খাওয়ার ‘অপরাধে’ নির্মমভাবে প্রাণ হারাতে হল ১৪ বছরের এক কিশোরীকে! তার ‘দোষ’? সে তার সৎ মাকে না জানিয়েই ওই দই বড়া কিনে খেয়েছিল।
বুধবার এমনই এক নির্মম, নৃশংস ও পৈশাচিক ঘটনার সাক্ষী থাকলেন ওডিশার নয়াগড় জেলার পোড়াশাহি গ্রামের বাসিন্দারা। খুনের কারণ হিসাবে এমনটাই দাবি করছেন তাঁরা।
সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুসারে, ১৪ বছরের ওই কিশোরীকে পিটিয়ে খুন করেছে তারই ৩২ বছরের সৎ মা! কারণ, সে ওই মহিলাকে না জানিয়েই বাড়ির বাইরে দোকান থেকে এক প্লেট দই বড় কিনে খেয়েছিল!
পুলিশ ইতিমধ্যেই ওই সৎ মাকে আটক করেছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। একইসঙ্গে, পুলিশের অনুমান, ঘটনার সময় কিশোরীর বাবা সেখানে উপস্থিত ছিলেন না বলে দাবি করা হলেও, তাঁর আচরণও যথেষ্ট সন্দেহজনক।
প্রাথমিকভাবে পুলিশ মনে করছে, কিশোরীকে খুনের ঘটনায় তার বাবারও কোনও ভূমিকা থাকতে পারে। তাই তাঁকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
স্থানীয় থানার এক আধিকারিক টাইমস অফ ইন্ডিয়া-কে জানিয়েছেন, ‘ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় নিয়ম মাফিক অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। অভিযুক্ত মহিলাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। যাতে জানা যায়, সেদিন ঠিক ঘটনা ঘটেছিল। আমরা আমাদের তদন্ত চালাচ্ছি। উপযুক্ত প্রমাণ হাতে এলেই গ্রেফতারির প্রক্রিয়া শুরু করা হবে।’
ওই পুলিশ আধিকারিক আরও জানান, ‘গ্রামের বাসিন্দারাই আমাদের এই ঘটনা সম্পর্কে অবহিত করেন। তারপর আমরা ঘটনাস্থলে পৌঁছই এবং প্রাথমিক তদন্ত শুরু করি। আমরা সেখান থেকে এক কিশোরীর দেহ উদ্ধার করি। দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।’
স্থানীয় বাসিন্দারা সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, নিহত কিশোরীর নাম তুলসী। তার সৎ মা মন্দা নানা অছিলায় রোজ তার উপর অত্য়াচার করত।
ব্রজবন্ধু সোয়াইন নামে নিহত কিশোরীর এক আত্মীয় পুলিশকে জানিয়েছেন, ‘ওই মেয়েটির সৎ মা তার উপর নিদারুণ অত্যাচার করত। রোজ তাকে ধরে মারত। ওই মহিলাই মেয়েটাকে পিটিয়ে খুন করেছে। শুধুমাত্র ২০ টাকার জন্য! কারণ, সে ওই ২০ টাকা দিয়ে দই বড়া কিনে খেয়েছিল! আমরা চাই, ওই মহিলাকে যেন কঠোরতম শাস্তি দেওয়া হয়।’
অথচ, এই টাকা কিন্তু মেয়েটির সৎ মা তাকে দেয়নি! ব্রজবন্ধু জানিয়েছেন, তিনি কাছেই থাকেন। তাঁর কাছেই দই বড়া খেতে চেয়েছিল তুলসী। তিনিই ওই নাবালিকাকে ২০ টাকা দেন দই বড়া কেনার জন্য।
অভিযোগ, তা সত্ত্বেও কেন তাকে না জানিয়ে ওই ২০ টাকা খরচ করে তুলসী দই বড়া কিনে খেয়েছে, এই উদ্ভট অজুহাতে মন্দা তাকে বেধড়ক মারধর করতে শুরু করে। আর তাতেই বেঘোরে প্রাণ যায় ওই কিশোরীর।