ভারতীয় জাদুঘরে এবিসি অডিটোরিয়ামে ‘খোলা হাওয়া’ নামক সংগঠনের আয়োজিত ‘বাংলাদেশ ইন ক্রাইসিস’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় শুভেন্দু অধিকারী(Suvendu Adhikari) বলেন, ‘পাকিস্তানই কার্যত বাংলাদেশ চালাচ্ছে। পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত কোনওদিন নিজের অফিসে থাকছেন না, তিনি গোটা বাংলাদেশ ঘুরে বেড়াচ্ছেন। ওখানে যে মৌলবাদী সরকার দেশ চলছে, এখানে বিএনপির কোনও ভূমিকা নেই, আওয়ামি লিগ তো ছেড়েই দিন। জাতীয় পার্টিরও ভূমিকা নেই। জামাতের লোকরা চালাচ্ছে, যারা ১৯৭১-এ পাকিস্তানকে সমর্থন করেছিল।’
এদিকে শুভেন্দু বলেন, ‘ভারতীয় নাগরিক হিসাবে আমি প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করব, আওয়ামি লিগ করার অপরাধে বা হিন্দু হওয়ার জন্যে যারা বাংলাদেশ থেকে এখানে পালিয়ে এসেছেন, তাদের দয়া করে জেলে পুরবেন না। আগেও হাসিনা, বঙ্গবন্ধুর পরিবারকে ভারত আশ্রয় দিয়েছে। তাই অনুরোধ করব, জাত-ধর্ম কিছু দেখতে হবে না, যারা প্রাণ বাঁচাতে ভারতে পালিয়ে এসেছেন, তাদের তাড়াবেন না। তারা শরণার্থী। আওয়ামি লিগের শীর্ষ নেতাদের পাসপোর্টও কেড়ে নিয়েছে, তাদের জেলে ভরবেন না। বরং রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন।’
শুভেন্দু আরও বলেন, ‘আগামী কয়েক মাসের মধ্যে বাংলাদেশকে হিন্দু শূন্য করতে চাইছে ওরা। মুক্তিযুদ্ধের সমর্থকদের বর্ডার গার্ড, শিক্ষা কমিটি, সরকারি দফতর থেকে বাদ দিচ্ছে। এমনকী ভাস্কর্যও মুছে ফেলছে। শুধু বঙ্গবন্ধুর নয়, রবীন্দ্রনাথের একটা ভাস্কর্যও বাংলাদেশে নেই। চট্টগ্রামে গান্ধীজির স্মারক ভেঙে ফেলা হয়েছে। ইন্দিরা গান্ধীর নামে থাকা লাইব্রেরি ধ্বংস করা হয়েছে। এই ধ্বংস যদি বন্ধ না হয়, তবে তাদের সংসদও পাকিস্তানের হাতে চলে যাবে। একদিন হয়ত বাংলাদেশের সংসদ ঘোষণা করবে বিভাজনটা ভুল ছিল, আমরা সংযুক্তিকরণ চাইছি।’
এদিকে ইউনুসকে আক্রমণ শানিয়ে শুভেন্দু বলেন, ‘তাঁর সঙ্গে বাংলাদেশের আত্মিক কোনও যোগ নেই। ইউনূস এখন নিজের সময়কে উপভোগ করছেন, নিজের গ্রামীণ ব্যাঙ্ককে রক্ষা করছেন। সম্প্রতি যে কর তিনি বসিয়েছেন, তাতে ২০২৯ সাল পর্যন্ত করছাড় পেয়েছে গ্রামীণ ব্যাঙ্ক। অপারেশন ডেভিল হান্ট তাঁর হাতে নেই। হিন্দু সংখ্যালঘুদের শেষ করছে। যদি তারা কিছু বলতে না পারেন, তবে কোনও একদিন সকালে পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশ জুড়ে যায়, আমি তো অবাক হব না।’ এরপর নিজের মায়ের কথা তুলে ধরে শুভেন্দু বলেন, ‘বাংলাদেশে যা হচ্ছে, তা কোনও গণতান্ত্রিক দেশে হয় না। আমি নিজে ভিকটিম। আমার মা শ্রীমতী গায়েত্রী ভট্টাচার্য, তাঁর বাবা বরিশালের শিক্ষক ছিলেন। ১৯৫৯ সালে এক কাপড়ে চলে আসতে বাধ্য হয়েছিলেন। এমন অনেক হিন্দু আছেন, যাদের শুধুমাত্র হিন্দু হওয়ার কারণে বাংলাদেশ ছেড়ে চলে আসতে বাধ্য হয়েছেন।’