সংশোধিত ওয়াকফ আইনের প্রতিবাদ ও আন্দোলনের জেরে অশান্তি ছড়িয়েছে মুর্শিদাবাদ জেলার নানা অংশে। শুক্রবার (১১ এপ্রিল, ২০২৫) সুতি ও সামশেরগঞ্জে যে হিংসার আগুন জ্বলে ওঠে, তাতে যেমন বাস, অ্য়াম্বুল্যান্স পুড়েছে, তেমনই জেলার একের পর এক রেল স্টেশনে তাণ্ডব চালানোর অভিযোগ উঠেছে প্রতিবাদীদের একাংশের বিরুদ্ধে। রেলের তরফেও তাদের সম্পত্তি ভাঙচুরের অভিযোগ সামনে আনা হয়েছে।
এবার এই বিষয়টি নিয়ে সরব হলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা তথা বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী। শনিবার (১২ এপ্রিল, ২০২৫) দুপুরে নিজের ভেরিফায়েড এক্স অ্যাকাউন্ট থেকে একটি পোস্ট করেন তিনি। তাতে ওয়াকফ-প্রতিবাদের নামে রেলের সম্পত্তি নষ্টের ঘটনায় তীব্র ধিক্কার জানান। পাশাপাশি, তুলে ধরেন, এ নিয়ে ইতিমধ্য়েই রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বিষ্ণোইকে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন তিনি। তাতে রেলের সম্পত্তি নষ্টের ঘটনাগুলি একত্রে এনে সবক’টির ক্ষেত্রেই জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা – এনআইএ-কে দিয়ে তদন্ত করানোর দাবি তুলেছেন শুভেন্দু।
বিরোধী দলনেতা তাঁর এক্স পোস্টে লিখেছেন, ‘সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার একাধিক রেল স্টেশনে ভাঙচুর ও তাণ্ডব চালিয়েছে তথাকথিত প্রতিবাদীরা। তারা সংশোধিত ওয়াকফ আইনের প্রতিবাদে এসব করেছে। আদতে এই ধরনের ঘটনা হল – ইচ্ছাকৃত ধ্বংসলীলা যা – রেলের মতো সংবেদনশীল যাত্রী পরিষেবা প্রদানকারী পরিকাঠামোর ক্ষতি করেছে। এর ফলে শুধুমাত্র জরুরি পরিষেবাই ব্যাহত হয়নি। সেইসঙ্গে, আমজনতার নিরাপত্তা ও জাতীয় সুরক্ষাও বিঘ্নিত হয়েছে।’
শুভেন্দু এর পরই জানিয়েছেন, ‘আমি মাননীয় রেলমন্ত্রী শ্রী অশ্বিনী বিষ্ণোইজিকে একটি চিঠি লিখেছি। তাঁকে অনুরোধ করেছি, যাতে পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার একাধিক রেল স্টেশনে ঘটা ভাঙচুরের ঘটনাগুলি একত্র করে, এনআইএ-কে দিয়ে সেগুলির তদন্ত করানো হয়।’
প্রসঙ্গত, একাধিক স্টেশনে ভাঙচুর, রেললাইন অবরোধ-সহ নানা ঘটনার জেরে শুক্রবার দুপুরের পর থেকেই মুর্শিদাবাদের উপর দিয়ে যাওয়া বিভিন্ন রেল রুটে স্বাভাবিক পরিষেবা ব্যাহত হয়। যার জেরে রাত ৮টার সময় রেলের তরফে একটি বিবৃতিও প্রকাশ করা হয়। তাতে জানানো হয়, এমন কিছু ঘটনা ঘটেছে, যার সঙ্গে রেলের কোনও সম্পর্ক নেই, তার জেরেই ওই দিন পরিষেবা ব্যাহত হয়েছে। এমনকী, কোথায় কোথায় জনতা রেললাইন অবরোধ করেছিল, সেই সংক্রান্ত তথ্যও ওই বিবৃতিতে তুলে ধরা হয়।
রেলের পক্ষ থেকেও আরও জানানো হয়, এই অশান্তির জন্যই শুক্রবার দুপুরের পর থেকে একাধিক ট্রেন বাতিল করা হয়। বেশ কয়েকটি ট্রেনের যাত্রাপথ সঙ্কুচিত করা হয়। এবং বহু ট্রেন ঘুর পথে চালানো হয়। যার ফলে আখেরে সাধারণ রেলযাত্রীরাই দুর্ভোগে পড়েন।