Tangra Incident। মেয়েকে খুন করে কপালে চুমু খেয়েছিলেন

Spread the love

ট্য়াংরা(Tangra) কাণ্ডে পুলিশের কাছে প্রশ্ন ছিল অনেক। ছিল অনেক ধাঁধা। সূত্রের দাবি, বাড়ির ছোট কর্তা প্রসূন দে-কে(Prasun Dey) হেফাজতে নিয়ে জেরা করতেই ধীরে ধীরে রহস্যের জট খুলতে শুরু করেছে। ক্রমশ প্রকাশ্য়ে আসছে হাড় হিম করে দেওয়ার মতো এক ঘটনাপ্রবাহ! প্রসূনের কাছ থেকে এখনও পর্যন্ত যতটুকু তথ্য জানা গিয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে, সেই অনুসারে –

সপরিবার আত্মহত্যার প্রাথমিক ছক:

দে পরিবারের সদস্যরা ভেবেছিলেন প্রচুর পরিমাণে ঘুমের ওষুধ খেলেই সকলের নিশ্চিত মৃত্যু হবে। প্রথম থেকেই এই গোটা ঘটনায় সবথেকে বেশি সক্রিয় থেকেছেন প্রসূন। তাঁর দাবি অনুসারে, গত ১৭ ফেব্রুয়ারি রাতে তিনতলার ঘরে বসেই হামানদিস্তায় একসঙ্গে কড়া ডোজের ঘুমের ওষুধ ও প্রেশারের ওষুধ মিশিয়ে গুঁড়ো করেন তিনি।

তাঁর স্ত্রী রোমি যে পায়েস রান্না করেছিলেন, তাতে সেই মিশ্রণ মেশানো হয় এবং খাওয়া হয়। কিন্তু, সেই মিশ্রণে কাজ দেয়নি। ১৮ ফেব্রুয়ারি ভোর রাতে সবার আগে প্রসূনের ঘুম ভেঙে যায়। তারপর তিনি একে একে রোমি এবং তাঁর দাদা প্রণয় ও বউদি সুদেষ্ণাকে ঘুম থেকে ডেকে তোলেন।

সপরিবার আত্মহত্যার দ্বিতীয় পরিকল্পনা:

এরপর হাতের শিরা কেটে আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেই মতো প্রসূন তাঁর স্ত্রীর হাত কাটতে গেলে তিনি বাধা দেন। বলেন, আগে বাড়ির ছোটদের খুন করতে হবে। তা না হলে বাবা-মায়েদের মৃত্যুর পর তাদের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠবে।

এরপর প্রসূন ও রোমি তাঁদের একমাত্র সন্তান প্রিয়ম্বদার ঘরে আসেন। সে তখনও নিজের বিছানায় ঘুমে আচ্ছন্ন। প্রসূন জানান, মেয়ের হাতের শিরা কাটতে পারেননি তিনি। তাই স্ত্রীকে বলেন, সন্তানের পা দু’টো ভালো করে চেপে ধরতে। তারপর মেয়ের মুখে বালিশ চাপা দিয়ে তাকে শ্বাসরোধ করে খুন করেন প্রসূন।

মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর মেয়ের কপালে চুমুও খান বাবা-মা! তারপর তাঁরা ফিরে আসেন নিজেদের ঘরে। ঘরে ঢুকে অঝোরে কাঁদতে শুরু করেন রোমি। সন্তানকে খুন করে তখন তিনি বিধ্বস্ত। সেই অবস্থাতেই স্বামীকে বলেন, তাঁর হাতের শিরা কেটে দিতে! প্রসূন সেটাই করেন। কিন্তু, তাতেও মৃত্যু হচ্ছে না দেখে রোমি স্বামীকে অনুরোধ করেন, যাতে তিনি তাঁর গলার নলি কেটে দেন! প্রসূনও সেটাই করেন! স্ত্রীর মৃত্যু হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করেন।

এরপর প্রসূন যান তাঁর দাদা-বউদির ঘরে। তাঁদের জানান, মেয়ে-বউকে তিনি খুন করে এসেছেন। একথা শুনে সুদেষ্ণা নিজে রোমি আর প্রিয়ম্বদার দেহ দেখে আসেন। তারপর দেওরকে বলেন, একইভাবে তাঁরও হাতের শিরা ও গলার নলি কেটে খুন করা হোক। প্রসূন সেটাই করেন।

প্রসূনের দাবি, এরপর তিনি তাঁর ভাইপো প্রতীপকেও খুনের চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু, সে বেঁচে যায় এবং কাকাকে বলে, সে মরতে চায় না! তাকে যেন খুন করা না হয়। সে যেভাবে হোক বাঁচতে পারবে! এরপর প্রণয় তাঁর ছেলে প্রতীপকে নিয়ে তিনতলার একটি ঘরে চলে যান।

আত্মহত্যার তৃতীয় প্রচেষ্টা:

প্রসূনের দাবি, এরপর তিনিও তিনতলার একটি ঘরে চলে যান রক্তমাখা পোশাক খুলে ফেলেন। তারপর ফের একবার ঘুমের ওষুধ খাওয়া হয়। প্রণয় ও প্রসূন দু’জনই দ্বিতীয় দফায় ঘুমের ওষুধ খান। প্রতীপকেও তা খাওয়ানো হয়। কিন্তু, এবারও লাভ হয় না। আবারও ঘুম ভেঙে যায় সকলের।

আত্মহত্যার চতুর্থ ও শেষ চেষ্টা:

এরপর বাড়ি থেকে বেরোনোর সিদ্ধান্ত প্রণয় ও প্রসূন। ঠিক করেন গাড়ি দুর্ঘটনা ঘটিয়ে আত্মঘাতী হবেন তিনজনে। সেই মতোই নাবালক প্রতীপকে সঙ্গে নিয়েই প্রণয় ও প্রসূন নিজেদের গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পড়েন। দীর্ঘক্ষণ ঘোরাঘুরি করার পর অবশেষে বাইপাসে মেট্রোর একটি পিলারকে চিহ্নিত করেন তাঁরা। স্থির করেন, ওই পিলারেই গাড়ি নিয়ে সজোরে ধাক্কা মারবেন।

এয়ার ব্যাগ যাতে অকেজো হয়ে যায়, তার জন্য দুর্ঘটনা ঘটানোর আগে নিজেদের সিট বেল্টও খুলে ফেলেন গাড়ির আরোহীরা। কিন্তু, ওই গাড়ির প্রযুক্তি এমনই ছিল যে সিট বেল্ট খোলা অবস্থাতেও দুর্ঘটনা ঘটার সঙ্গে সঙ্গেই এয়ার ব্যাগ খুলে যায়। ফলত – প্রাণঘাতী আঘাত থেকে রক্ষা পেয়ে যান সকলেই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *