লস্কর-ই-তৈবার মোস্ট ওয়ান্টেড জঙ্গি নেতা আবু কাতালকে হত্যা করা হল পাকিস্তানে। রিপোর্ট থেকে জানা গিয়েছে, ১৫ মার্চ রাতে হত্যা করা হয়েছে এই লস্কর জঙ্গিকে। এই আবু কাতাল আবার জঙ্গি নেতা হাফিজ সইদের(Hafiz Sayed) ঘনিষ্ঠ ছিল বলে দাবি করা হয়। ভারতে নানা জঙ্গি হামলার ষড়যন্ত্রে তার গুরুত্বপূর্ণ হাত ছিল। গত বছরের ৯ জুন শিবখোড়ি থেকে ফেরার বাসে তীর্থযাত্রীদের উপর হামলার ঘটনাতেও সে জড়িত ছিল। ওই হামলায় ১০ জন নিহত হয়েছিলেন।
আবু কাতাল কাশ্মীরে সন্ত্রাসবাদী ষড়যন্ত্রে জড়িত ছিল। অবশ্য জঙ্গি কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত থাকলেও পাকিস্তানে সে স্বাচ্ছন্দ্যে বসবাস করত বলে দাবি করা হয়েছে রিপোর্টে। রাজৌরি জেলার ধাংরি গ্রামে সাধারণ মানুষদের লক্ষ্য করে জঙ্গি হামলার ঘটনাতেও তার নাম উঠে এসেছিল তার। ২০২৩ সালের চার্জশিটে তার নাম অন্তর্ভুক্ত করেছিল এনআইএ। সেই বিস্ফোরণে মৃত্যু হয়েছিল সাতজনের। দাবি করা হয়, সে দীর্ঘদিন ধরে লস্করের হয়ে কাজ করছিল। ২৬/১১ হামলার মাস্টারমাইন্ড হাফিজ সইদের খুব ঘনিষ্ঠ ছিল সে। দু’জনেই একসঙ্গে সন্ত্রাসবাদী হামলার ছক কষত।
সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, ঝিলামের সিংঘিতে গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রাণ হারিয়েছে জঙ্গি নেতা আল কাতাল। গত কয়েক মাসে ভারতের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারী বহু পাকিস্তানি জঙ্গির মৃত্যু হয়েছে পাকিস্তানে। সম্প্রতি লস্করের শীর্ষ কমান্ডার রিয়াজ আহমেদ ওরফে কাসেমও নিহত হয়েছে পাকিস্তানে। এছাড়া বশির আহমেদ নামে এক সন্ত্রাসী সন্দেহজনক পরিস্থিতিতে নিহত হয়। দীর্ঘদিন ধরেই জঙ্গিদের আশ্রয় দিয়ে আসছে পাকিস্তান। একই সঙ্গে পাকিস্তানে চরমপন্থা ও সন্ত্রাসবাদের পাশাপাশি বিচ্ছিন্নতাবাদ এমন চরমে পৌঁছেছে যে, এখন সেখানকার সেনা সদস্যরাও নিরাপদ নন।
এদিকে পাকিস্তানে অশান্তি লেগেই আছে। সম্প্রতি খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের বান্নু এবং লাক্কি মারওয়াত জেলায় ৪টি পুলিশ স্টেশনে হামলা চালায় পাক তালিবান জঙ্গি গোষ্ঠী। এর আগে খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের দক্ষিণে ওয়াজজিরিস্তানের একটি মসজিদে আত্মঘাতী হামলা হয়েছিল ১৪ মার্চ। প্রার্থনার সময় আইইডি বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। সেই ঘটনায় বেশ কয়েকজন গুরুতর ভাবে জখম হয়েছিল।
এদিকে খাইবার প্রদেশের পাশাপাশি ফের একবার বালোচিস্তানে হামলার শিকার হয়েছে পাকিস্তান। সেখানে পাক সেনার কনভয়তে হামলা হয়েছে। বোলান অঞ্চলে জাফর এক্সপ্রেসে হামলার ক্ষত এখনও সারেনি। এরই মাঝে বালোচিস্তানে পরপর হামলার শিকার পাক সেনা। পাকিস্তানের তুরবত এলাকায় চিন-পাকিস্তান ইকোনমিক রুটে পাকিস্তানের সেনা কনভয়ে হামলাটি হয়েছিল। মনে করা হচ্ছে বালোচ লিবারেশন আর্মিই এই হামলা চালিয়ে থাকতে পারে। কারণ এর আগে পাকিস্তানের পাশাপাশি চিনকে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছে বিএলএ। এনিয়ে ২৪ ঘণ্টায় বালোচিস্তানে এটা ছিল দ্বিতীয় হামলা। এর আগে হারনাই এলাকায় বোম্ব ডিজপোজাল স্কোয়াডকে নিশানা করা হয়েছিল। আর এর আগে জাফর এক্সপ্রেস হাইজ্যাক করেছিল বালোচ বিদ্রোহীরা। বিএলএ-র দাবি, এই অভিযানে তারা ২১৪ জন বন্দিকে মেরে দিয়েছে।