গলায় মোটা চেন, সব কটা আঙুলে মোটা মোটা সোনার আংটি। দেখতে ঠিক সিনে জগতের ভিলেনের মতন হলেও তিনি হলেন শাসকদলের একনিষ্ঠ কর্মী। আর এই শাসকদলের নাম করেই ভরি ভরি সোনার গয়না পরে ঘুরে বেড়ান তিনি। বাইরের সমস্ত মানুষকে ভিলেনের মতনই ধমকে চমকে রাখেন তিনি। এমনকি মাথার উপর নাকি দিদির ভাইপোর হাতও আছে বলে দাবি করেন এই ব্যক্তি। পকেটে সবসময় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেটার প্যাড নিয়ে ঘোরেন। আর সেই দেখিয়েই টাকা তোলেন।
আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে লাগাতার বিক্ষোভ, আন্দোলন এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের(Mamata Banerjee) পদত্যাগের দাবি অব্যাহত রয়েছে। এইসবে এমনিতেই চরম অস্বস্তির মধ্যে রয়েছে রাজ্য সরকার। সেই আবহে শাসক দল তৃণমূলের অস্বস্তি আরও বাড়িয়ে দিল নিউ টাউনের একটি ঘটনা। দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের(Abhishek Banerjee) নাম করে কোটি কোটি টাকা তোলাবাজির অভিযোগ উঠল তৃণমূলেরই এক নেতার বিরুদ্ধে।
অভিযোগ উঠেছে, অভিষেকের নামে নকল লেটার হেড ছাপিয়ে কয়েক কোটি টাকার তোলাবাজি করেছেন তিনি। ইতিমধ্যেই তার বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে। তার ভিত্তিতে তৃণমূল নেতাকে গ্রেফতার করেছে কলকাতা পুলিশ। যদিও তৃণমূলের দাবি, ধৃত ব্যক্তি তৃণমূলের কোনও নেতা নন। এই নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক টানাপোড়েন।পুলিশ সূত্রের খবর, ধৃতের নাম কৌশিক সরকার(Koushik Sarkar)। শেক্সপিয়র সরণী থানার পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেছে। কৌশিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ, নকল লেটার হেড দেখিয়ে বিভিন্ন জায়গায় সুপারিশ করে সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রচুর টাকা তুলেছেন। পাশাপাশি সেই লেটারে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সই জাল করে বসান তিনি।
উত্তর দিনাজপুরের এক বাসিন্দা তার বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানিয়েছিলেন। তার পরে পুলিশ তদন্ত নামে। ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাতে কৌশিককে গ্রেফতার করে কলকাতা পুলিশ। আজ শুক্রবার ধৃতকে ব্যাঙ্কশাল আদালতে তোলা হবে। তারপরে তাকে নিজেদের হেফাজতে চেয়ে আবেদন জানাবে পুলিশ। কতজনের সঙ্গে ধৃত প্রতারণা করেছে? কত টাকা প্রতারণা করেছে? সেই সমস্ত তথ্য জানার জন্য তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। এছাড়াও, কোনও প্রতারণা চক্রের সঙ্গে ধৃত জড়িত কিনা তাও জানার চেষ্টা করছে পুলিশ। অভিযোগ উঠেছে, এর আগে জমি দখলের অভিযোগ উঠেছিল এই কৌশিকের বিরুদ্ধে।
এদিকে, এই খবর প্রকাশ্যে আসতে তৃণমূলের তরফে তাকে দলের নেতা বলতে অস্বীকার করেছে নেতৃত্ব। তাদের বক্তব্য, যাকে তৃণমূল নেতা বলে দাবি করা হচ্ছে তিনি দলের কোনও পদে ছিলেন না। তবে দলের বিভিন্ন কর্মসূচিতে তাকে দেখা যায়। এলাকার তৃণমূল বিধায়ক তাপস চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, ধৃত কোনও তৃণমূল নেতা নন। যে কেউ যদি দলের কোনও নেতার ছবি দেখিয়ে দাবি করতে পারে সে ওই দল করে। তবে দল অন্য রকমের অন্যকে প্রশ্রয় দেয় না বলে তিনি জানান।