মুর্শিদাবাদে ওয়াকফ সংশোধনীর বিরোধিতার নামে যে তাণ্ডব চলেছে, তাতে পুলিশকেই কাঠগড়ায় তুললেন ফরাক্কার তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক মনিরুল ইসলাম। উল্লেখ্য, তাঁর বাড়িতে হামলা চালানো হয়েছিল গতকাল। তাঁর বাড়ি থানা থেকে মাত্র ১০০ মিটার দূরে। সেখানে তাঁকে হেনস্থাও করা হয়েছিল বলে অভিযোগ। এই আবহে পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিলেন মনিরুল। এই নিয়ে বিধায়ক বলেন, ‘এখানে বাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। বাড়ির সামনে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। ভয়ে পরিবারের লোকজন অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছে। তবে যাই হয়ে যাক না কেন আমি একাই বাড়িতে থাকব।’
মনিরুলের কথায়, ‘আমরা নিরাপত্তা চাইছি। আমরা জনপ্রতিনিধিরা যেখানে নিরাপদ নই, সেখানে সাধারণ মানুষ কীভাবে নিরাপত্তা পাবে? আমার গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। এভাবে চলতে পারে? দুষ্কৃতীরা আমার বাড়ির সামনে ভাঙচুর করল, আগুন লাগিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করল, যেখানে আমার বাড়ি থানা থেকে ১০০ মিটার দূরে। এই দুষ্কৃতীরা লুটপাট চালানোর চেষ্টা করেছে। নিশ্চয়ই পুলিশের দিক থেকে কোনও ত্রুটি বিচ্যুতি থেকে যাচ্ছে। আমার উপরে বারবার হামলা হয়েছে। একদম নিরাপত্তা নেই। পুলিশ যে নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ, তা স্বীকার করতে আমি পিছুপা হব না। ছোট ছোট ছেলেরা হামলা করেছে আমার বাড়ির উপরে।’
এদিকে সামশেরগঞ্জে ছেলে-বাবাকে বাড়ি ঢুকে কুপিয়ে খুনের ঘটনাতেও স্থানীয়রা পুলিশের ভূমিকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন। পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্যে পাঠাতে এলে তাদের বাধা দিয়েছিলেন স্থানীয়রা। অভিযোগ, হিংসা চলাকালীন সময় পুলিশকে বারবার ফোন করা হলেও কারও দেখা পাওয়া যায়নি। এর আগেও ওয়াকফ বিরোধী আন্দোলনে হিংসা ঠেকাতে গিয়ে পুলিশকে দোকান বা মসজিদে আশ্রয় নিতে দেখা গিয়েছিল।
এই আবহে শনিবার সন্ধ্যায় রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ এবং ডিজি রাজীব কুমারের সঙ্গে ভিডিয়ো বৈঠক করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব। সেই বৈঠকে রাজ্যের ডিজিপি জানান, ধুলিয়ান-সহ আশপাশের এলাকায় এখনও চারা উত্তেজনা বিরাজ করছে। তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। কড়া নজরদারি চালানো হচ্ছে। বৈঠকের পর কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব জানান, মুর্শিদাবাদে আগে থেকেই মোতায়েন ছিলেন ৩ কোম্পানি বিএসএফ জওয়ান। আরও পাঁচ কোম্পানি জওয়ন মোতায়েন করা হবে জেলায়। এই আবহে সব মিলিয়ে ৮০০ জনের কাছাকাছি বিএসএফ জওয়ান মোতায়েন থাকবেন জেলায়।