ট্রাম্পের শুল্ক নীতির জেরে আরও ‘রক্তাক্ত’ মার্কিন শেয়ার বাজার। ৩ এপ্রিল ডাও জোনস পড়েছিল ১৬৭৯ পয়েন্ট। আর ৪ এপ্রিল ডাও জোনসে আরও ২২৩১.০৭ পয়েন্টের পতন দেখা গেল। রিপোর্ট অনুযায়ী, ৪ এপ্রিল এসঅ্যান্ডপি ৫০০ সূচক কমেছে ৫.৯৭ শতাংশ, যা ভারতের শেয়ার বাজার থেকে বেশ কয়েক গুণ। এদিকে ডাও জোনস ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যাভারেজ ৫.৫ শতাংশ পড়ে যায়। নাসডাক কম্পোজিট ৫.৮২ শতাংশ নেমেছে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ট্রাম্পের পালাটা শুল্ক চাপানোর ঘোষণায় মুদ্রাস্ফীতির সম্ভাবা দেখছে ওয়াল স্ট্রিট। এর জেরে মার্কিন বিনিয়োগকারীদের মধ্যে শেয়ার বিক্রির হিড়িক দেখা দিয়েছে। বড় বড় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের স্টক থেকে শুরু করে অপরিশোধিত তেলের দরে ধাক্কা লেগেছে গতকাল। এদিকে যে সোনার ওপরে বিনিয়োগকারীরা এতদিন ভরসা করে ছিলেন, তাতেও বড়সড় পতন দেখা যায়। এই সবের মাঝেই ছোট মার্কিন সংস্থাগুলি সবচেয়ে খারাপ ভাবে ধাক্কা খেয়েছে। ছোট স্টকগুলির রাসেল ২০০০ সূচক ৪.৭৩ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে গতকাল।
উল্লেখ্য, ট্রাম্প মসনদে আসার পরপরই মার্কিন শেয়ার বাজারে উত্থান দেখা গিয়েছিল। আরও বেশি ব্যবসার আশায় ফুলে ফেঁপে উঠেছিল স্টক মার্কেট। তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে ‘আবার মহান’ বানাতে গিয়ে শেয়ার বাজারের ১২টা বাজিয়েছেন ট্রাম্প। তাঁর শুল্ক নীতির জেরে এখ মার্কিন মুলুকে বিভিন্ন পণ্যের দাম বৃদ্ধি পেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। মন্দার শঙ্কাও জোরালো হয়েছে। সঙ্গে মুদ্রাস্ফীতির আতঙ্কও তাড়া করছে মার্কিনিদের। বিশ্লেষকরা বলছেন যে ক্রমাগত মুদ্রাস্ফীতির নতুন লক্ষণ এবং ট্রাম্পের শুল্ক কৌশলকে ঘিরে অস্পষ্ট ধারণার কারণে বিনিয়োগকারীদের মনোভাব নড়বড়ে গিয়েছে। নতুন করে বাণিজ্য যুদ্ধের সম্ভাবনা বিশ্ববাজারে ছায়া ফেলেছে। গোল্ডম্যান শ্যাকস সম্প্রতি জানিয়েছে, মার্কিন মুলুকে এখন মন্দার সম্ভাবনা ৩৫ শতাংশ। আগে এই হার ছিল ২০ শতাংশ। এদিকে এর আগে মার্কিন জিডিপি বৃদ্ধির হার ২ শতাংশ হতে পারে বলে দাবি করেছিল তারা। এখন সেই হারের পূর্বাভাস নামিয়ে আনা হয়েছে ১.৫ শতাংশে।
এদিকে মার্কিন বাজারে এই ধস নামার আগে শুক্রবার ভারতীয় শেয়ার বাজারেও ট্রাম্পের শুল্ক ঘোষণার প্রভাব পড়েছিল। শুক্রবার বাজারে লেনদেন শুরু হওয়ার পরপরই এক ধাক্কায় প্রায় ৮০০ পয়েন্ট পড়ে গিয়েছিল সেনসেক্স। শেষ পর্যন্ত শুক্রবার ক্লোজিং বেলের সময় আগের দিনের তুলনায় সেনসেক্স ৯৩০.৬৭ পয়েন্ট (১.২২ শতাংশ) নীচে ছিল। এই আবহে সেনসেক্স গিয়ে ঠেকে ৭৫,৩৬৪.৬৯ পয়েন্টে। সর্বকালের সর্বোচ্চ সীমা (৮৫,৯৭৮.২৫ পয়েন্ট) থেকে যা ১০,৬১৩.৫৬ পয়েন্ট নীচে। এদিকে গতকাল নিফটি ৫০ সূচক ৩৪৫.৬৫ পয়েন্ট বা ১.৪৯ শতাংশ নীচে ছিল গত সেশনের তুলনায়। এই আবহে নিফটি গিয়ে ঠেকেছিল ২২,৯০৪.৪৫ পয়েন্টে।