মার্কিন ও চিনা শুল্ক যুদ্ধ থামার যেন নামই নেই। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন এবার চিনা পণ্যের আমদানির ওপর নতুন করে শুল্ক চাপাল। এই আবহে এবার চিনা পণ্যে ২৪৫ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপের ঘোষণা করল যুক্তরাষ্ট্র। এই আবহে ওয়াশিংটন এবং বেজিংয়ের মধ্যে বাণিজ্য দ্বন্দ্বের তীব্রতা আরও বেড়ে গেল। মঙ্গলবার হোয়াইট হাউজ একটি ফ্যাক্ট শিট প্রকাশ করে চিনা পণ্যে শুল্ক বৃদ্ধির এই সিদ্ধান্তের কথা জানায়। ওয়াশিংটনের বক্তব্য, বেইজিংয়ের সাম্প্রতিক রফতানি বিধিনিষেধ এবং প্রতিশোধমূলক শুল্কের প্রতিক্রিয়া হিসাবে এই পদক্ষেপ করা হয়েছে।
মার্কিন প্রশাসনের অভিযোগ, গ্যালিয়াম, জার্মেনিয়াম এবং অ্যান্টিমনিসহ গুরুত্বপূর্ণ উচ্চ প্রযুক্তির উপকরণের সবরাহ সীমাবদ্ধ করার অভিযোগ করেছে চিন। সামরিক, মহাকাশ এবং সেমিকন্ডাক্টর শিল্পের জন্য গুরুত্বপূর্ণ উপাদান এগুলি। প্রসঙ্গত, সম্প্রতি ছয়টি ভারী বিরল পৃথিবী ধাতু এবং বিরল পৃথিবী চুম্বকের রফতানি স্থগিত করেছিল চিন। এর আগে গত ১১ এপ্রিল চিন মার্কিন পণ্যের ওপর শুল্ক বাড়িয়ে ১২৫ শতাংশ করেছিল। এরপর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প চিনা আমদানির ওপর ১৪৫ শতাংশ শুল্ক বাড়ানোর ঘোষণা করেছিলেন। আর এবার চিনা পণ্যের ওপর শুল্ক বাড়তে বাড়তে ২৪৫ শতাংশের গণ্ডি ছুঁল।এর আগে ‘মার্কিন শুল্কের অপব্যবহার’ রুখতে ভারতের সাহায্য চেয়েছিল চিন। একসঙ্গে মার্কিন শুল্ক জুজুকে প্রতিহত করার আহ্বান জানিয়ে দিল্লিকে বার্তা দিয়েছিল বেজিং। ভারতে অবস্থিত চিনা দূতাবাসের মুখপাত্র ইউ জিং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক পদক্ষেপের সমালোচনা করে বলেছিলেন, চিন-ভারত অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক পারস্পরিক সুবিধার ওপর প্রতিষ্ঠিত। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কের অপব্যবহারে গ্লোবাল সাউথের দেশগুলি তাদের উন্নয়নের অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এই সমস্যাগুলি কাটিয়ে উঠতে বিশ্বের দুই বৃহত্তম উন্নয়নশীল দেশের একত্রিত হওয়া উচিত।
এদিকে মার্কিন শুল্ক আরোপের আগেই আমেরিকাকে তোপ দেগে চিন বলেছিল, ‘ভুলের উপর ভুল করছে আমেরিকা। আরও এক বার আমেরিকার ব্ল্যাকমেল করার চরিত্রটি প্রকাশ্যে চলে এল।’ চিনের সাফ কথা, ‘যদি আমেরিকা এই ভাবেই চলার কথা ভাবে, তবে চিনও শেষ পর্যন্ত লড়াই করবে।’ প্রসঙ্গত, বিশ্বের ৫৭টি দেশের ওপর শুল্ক চাপিয়ে নিজের দেশকেই মন্দার দিকে ঠেলে দিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই আবহে মার্কিন শেয়ার বাজারে ধস নেমেছিল গত সপ্তাহের শেষের দিকে। সেই সময় ডোনাল্ড ট্রাম্পের বক্তব্য ছিল, ‘এটাই বড়লোক হওয়ার সময়।’ তাঁর স্পষ্ট বক্তব্য, ‘আমার শুল্ক নীতি বদলাবে না।’ পরে অবশ্য প্রায় সব দেশের ওপরেই অতিরিক্ত শুল্ক আপাতত ৯০ দিনের জন্যে স্থগিত করেছিলেন ট্রাম্প। যদিও চিনের ওপর শুল্ক বাড়িয়েই চলেছেন ট্রাম্প।