কড়া হাতে হিংসার রোখার বার্তা দিয়েছিলেন সকালেই। তার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই মুর্শিদাবাদ পৌঁছে গেলেন রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার। সংবাদমাধ্যমের হাতে আসা তথ্য অনুসারে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের নির্দেশেই মুর্শিদাবাদ গিয়েছেন রাজীব কুমার।
সংশ্লিষ্ট একটি সূত্রের দাবি, জেলা সদর বহরমপুরে পুলিশের কর্তাদের সঙ্গে জরুরি বৈঠক করতে পারেন তিনি। এছাড়াও, হিংসা উপদ্রুত এলাকাগুলিতেও যেতে পারেন তিনি। ঘুরে দেখতে পারেন সামশেরগঞ্জ, সুতি প্রভৃতি জায়গার পরিস্থিতি।
শোনা যাচ্ছে, শুধুমাত্র পুলিশকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসা বা এলাকা পরিদর্শন করাই রাজীব কুমারের উদ্দেশ্য নয়। ওয়াকফ প্রতিবাদের নামে কে বা কারা জেলাজুড়ে এভাবে অশান্তির আগুন ছড়াল, সেই চক্রীদের খুঁজে বের করাই হবে রাজ্য পুলিশের ডিজির প্রধান উদ্দেশ্য। পাশাপাশি, তিনি আক্রান্ত স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গেও কথা বলতে পারেন বলে শোনা যাচ্ছে। তাঁদের কথা শোনার পাশাপাশি বাসিন্দাদের আশ্বস্ত করা, তাঁদের বোঝানো যে পুলিশ প্রশাসন তাঁদের সকলেরই পাশে রয়েছে, সেই বার্তাও এলাকাবাসীকে সরাসরি দেওয়ার চেষ্টা করবেন রাজীব কুমার। এককথায় এলাকায় শান্তি ফেরাতে যা যা করা দরকার, সেসবই করবে তিনি।
এদিকে, শুক্রবারই মুর্শিদাবাদ জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে হিংসা বাগে আনতে বিএসএফ-এর সাহায্য চাওয়া হয়েছিল। সেই আবেদনে সাড়া দিয়ে তৎক্ষণাৎ অ্যাকশনে নেমেছে সীমান্ত রক্ষী বাহিনী। শনিবারও জেলার নানা প্রান্তে বিএসএফ জওয়ানদের মোতায়েন থাকতে, রুটমার্চ করতে দেখা গিয়েছে। প্রচুর পরিমাণে পুলিশও নিরাপত্তায় নিযুক্ত করা হয়েছে। অন্যদিকে, পরিস্থিতির গুরুত্ব অনুধাবন করে কলকাতা হাইকোর্ট মুর্শিদাবাদে কেন্দ্রীয় বাহিনী নামানোর নির্দেশ ও অনুমতি দিয়েছে।
উল্লেখ্য, শনিবারই সকালে সাংবাদিক সম্মেলন করে রাজীব কুমার স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন, কোনও অবস্থাতেই আন্দোলনের নামে গুন্ডামি বরদাস্ত করা হবে না। কেউ যদি আইন হাতে তুলে নেন, তাহলে তাঁর বিরুদ্ধে কঠোরতম পদক্ষেপ করা হবে।
অন্য একটি সাংবাদিক সম্মেলনে রাজ্য পুলিশের এডিজি আইন-শৃঙ্খলা জাভেদ শামিম জানিয়েছিলেন, কোন অবস্থায় শুক্রবার মুর্শিদাবাদের প্রতিবাদীদের উপর গুলি চালাতে বাধ্য হয়েছিল পুলিশ। এসবের মধ্যেই শনিবারই জানা যায়, মুর্শিদাবাদে ওয়াকফ প্রতিবাদ ও অশান্তির জেরে প্রাণ গিয়েছে তিনজনের। অন্যদিকে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় ফের একবার সকল সম্প্রদায়ের মানুষকে শান্তিপূর্ণভাবে থাকার বার্তা দিয়েছেন।
এই পুরো ঘটনাক্রমের মধ্যে রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমারে মুর্শিদাবাদে পৌঁছে যাওয়া নিঃসন্দেহে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।