Yunus wants US Help for Bangladesh। ইউনুস এখন মার্কিন সাহায্যের জন্যে হা-হুতাশ করছেন

Spread the love

সম্প্রতি ইউনাইটেড স্টেটস এজেন্সি ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট বা USAID বাংলাদেশে তাদের সব প্রকল্পের কাজ বন্ধের জন্যে নির্দেশিকা জারি করেছে। এরই মাঝে সম্প্রতি আবার বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুসের সঙ্গে ঢাকায় দেখা করেন মার্কিন চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স ট্রেসি জ্যাকবসন। সেখানেই ফের মার্কিন সাহায্য চালুর জন্যে ট্রেসির কাছে আবেদন জানান মহম্মদ ইউনুস। উল্লেখ্য, সম্প্রতি আবার এনডিটিভির একটি রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, এই USAID-এর অর্থ ঘুর পথে হাসিনার সরকারকে নাড়িয়ে দিতে ব্যবহার করা হয়ে থাকতে পারে এককালে।

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে হাসিনা সরকারের বিদায়ের নেপথ্যে আমেরিকার হাত থাকা নিয়ে চর্চা, তর্ক চলেছে বহুদিন। একটা সময় এই নিয়ে বিস্ফোরক দাবি করেছিলেন শেখ হাসিনা নিজেও। যদিও পরে হাসিনা পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয় দাবি করেন, বাংলাদেশের পরিস্থিতির জন্যে আমেরিকা দায়ী নয়। তবে সম্প্রতি প্রকাশ্যে এল আন্তর্জাতিক রিপাবলিকান ইনস্টিটিউটের একটি রিপোর্ট। যা তারা মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টে জমা করেছিল। এনডিটিভি প্রফিটের রিপোর্ট অনুযায়ী, আন্তর্জাতিক রিপাবলিকান ইনস্টিটিউটের উল্লেখিত রিপোর্ট থেকেই বোঝা যাচ্ছে, কীভাবে হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে বাংলাদেশে ফাঁদ পেতেছিল আমেরিকার একটা অংশ। এদিকে ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউটের নামে ‘রিপাবলিকান’ থাকলেও এই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ট্রাম্পের রিপাবলিকান পার্টির কোনও যোগ নেই। এবং এই প্রতিষ্ঠানে অর্থ সাহায্য করত ইউএস এইড।

২০১৯ সালের ১ মার্চ থেকে ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর সময়কালের ওপর ভিত্তি করা এই রিপোর্টে রিপাবলিকান ইনস্টিটিউট জানিয়েছে, বাংলাদেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরি করতে নাকি তাদের ইনস্টিটিউটকে ১৭০ জন গণতন্ত্রপন্থী সহযোগিতা করেছিল। বাংলাদেশের খুলনা, রাজশাহী, চট্টগ্রাম, শিলেট এবং ঢাকার গ্রামীণ স্তরে এই ১৭০ জন গণতন্ত্রপন্থীকে চিহ্নিত করা হয়েছিল। তরা মূলত ‘ইনফর্ম্যান্ট’-এর কাজ করেছিল। এদের নিয়ে নাকি ওয়ার্কশপ পর্যন্ত করা হয়েছিল। এরপর তৌফিককে টাকা দিয়ে দু’টি গান গাওয়ানো হয়েছিল – ‘তুই পারিস’, ‘এই দায় কার?’।

এদিকে বাংলাদেশের শিল্পী মহলকে বিএনপি নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করানোর বন্দোবস্ত করেছিল এই ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউট। এই আবহে ইউটিউব এবং অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে মার্কিন অ্যাজেন্ডার ডকুমেন্টারি প্রচার করা হয়। সেই সময় খাদিজা রিয়ার মতো ‘সমাজসেবীদের’ অর্থসাহায্য দেয় ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউট। এছাড়াও সমাজের বিভিন্ন শ্রেণির মানুষদের নিয়েও ওয়ার্কশপ করা হয়। প্রতিবেদনে দাবি কর হয়েছে, গণতন্ত্রের পাঠ দেওয়ার নামে বিভিন্ন ভাবে সরকার এবং ব্যবস্থার বিরুদ্ধে মনোভাব তৈরি করার চেষ্টা করেছিল ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউট।

এদিকে মহম্মদ ইউনুস ‘ট্রাম্প বিরোধী’ হিসেবেই পরিচিত। মার্কিন নির্বাচনে ট্রাম্পের জয়ে তিনি অস্বস্তিতে আছেন বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ। উল্লেখ্য, বাংলাদেশের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মুখ্য উপদেষ্টা মদম্মদ ইউনুসের সঙ্গে মার্কিন ডেমোক্র্যাটদের সুসম্পর্কের কথা অনেকেই জানেন। এর আগে ২০১৬ সালে ট্রাম্প জেতার পরে প্যারিসে এক অনুষ্ঠানে ইউনুস বলেছিলেন, ‘ট্রাম্পের এই জয় সূর্য গ্রহণের মতো। কালো দিন আসছে। তা যেন আমাদের গ্রাস না করে, আত্মশক্তিকে দুর্বল না করে দেয়।’ আর পরে যখন বাংলাদেশের প্রতিনিধিদল ট্রাম্পকে শুভেচ্ছা জানাতে গিয়েছিল, তখন নাকি ইউনুসের নাম না নিয়েই ট্রাম্প বলেছিলেন, ‘ঢাকার মাইক্রোফাইন্যান্সের সেই ব্যক্তি কোথায়? শুনেছি, তিনি আমাকে হারাতে চাঁদা দিয়েছিলেন।’ উল্লেখ্য, সেবার ট্রাম্প হারিয়েছিলেন হিলারি ক্লিনটনকে। আর ক্লিনটন পরিবারের সঙ্গে ইউনুসের ঘনিষ্ঠতা সর্বজনবিদিত। বিপ্লবের পরে বাংলাদেশের মুখ্য উপদেষ্টা হিসেবে মার্কিন সফরে গিয়েও বিল ক্লিনটনের ফাউন্ডেশনের অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছিলেন ইউনুস। সেখানে বাংলাদেশের গণঅভ্যুত্থানের ‘মাথা’কে চিনিয়ে দিয়েছিলেন ইউনুস। এই সবের মাঝে বাংলাদেশ নিয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের নীতি কি হয়, সেদিকে নজর রয়েছে সবার। তার মধ্যেই মার্কিন সাহায্য বন্ধ হওয়ায় হা-হুতাশ করছেন ইউনুস।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *