আবারও দিল্লির আকাশ ঢেকে গিয়েছে ঘন ধোঁয়ায়। রাজধানীর বাতাসে দূষণের মাত্রা সোমবার পৌঁছেছে গুরুতর পর্যায়ে। বেশ কয়েকটি অঞ্চলের এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স ‘সিভিয়ার’ ক্যাটেগরিতে পৌঁছেছে। এই পরিস্থিতে বিজেপি নেতৃত্বাধীন দিল্লি সরকারকে অবিলম্বে পদক্ষেপ করার আর্জি জানিয়েছেন কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বঢরা।
সম্প্রতি প্রিয়াঙ্কা গান্ধী ওয়েনাড় এবং বিহারে সফর সেরে দিল্লিতে ফিরেছেন। এক্স হ্যান্ডলে কংগ্রেস নেত্রী লিখেছেন, ‘প্রথমে ওয়েনাড়, তারপরে বিহারের বচওয়ারা হয়ে দিল্লির বাতাসে ফিরে আসা সত্যিই মর্মান্তিক।’ তিনি আরও বলেন, ‘এই শহরটি যে দূষণে ঢাকা পড়েছে, তা যেন একটি ধূসর পর্দা যা পুরো শহরের উপর ছুড়ে দেওয়া হয়েছে। এটা আসলেই সময় এসেছে যে আমরা সবাই একত্রিত হয়ে, রাজনৈতিক সংকীর্ণতার বাইরে গিয়ে এই বিষাক্ত বাতাসের বিরুদ্ধে কিছু করতে এগিয়ে আসি। কেন্দ্রীয় এবং রাজ্য সরকারকে অবিলম্বে পদক্ষেপ করতে হবে। এই ভয়াবহ পরিস্থিতি থেকে রক্ষা পেতে যে কোনও পদক্ষেপ করলে আমরা সকলেই সমর্থন এবং সহযোগিতা করব। প্রতি বছর দিল্লির নাগরিকরা এই বিষাক্ত বাতাসের শিকার হন, কিন্তু কখনও কোনও স্থায়ী সমাধান মেলেনি।’ কংগ্রেস নেত্রী আরও লিখেছেন, ‘যারা শ্বাসকষ্টে ভুগছেন, যারা প্রতিদিন স্কুলে যান, বিশেষ করে শিশুরা এবং প্রবীণ নাগরিকদের জরুরি হস্তক্ষেপ প্রয়োজন যাতে এই গাঢ় অন্ধকার ধোঁয়া পরিষ্কার করা যায়।’ প্রিয়াঙ্কা গান্ধী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী রেখা গুপ্তা এবং কেন্দ্রীয় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রী ভূপেন্দ্র যাদবকে ট্যাগ করে তাঁদের অবিলম্বে পদক্ষেপ নেওয়ার আবেদন জানান।

দিল্লি দূষণ
রাজধানীর বায়ু মান গত কয়েক সপ্তাহে মারাত্মকভাবে অবনতি হয়েছে। রবিবাসরীয় সকালে দিল্লিবাসীর ঘুম ভেঙেছে ঘন কুয়াশার মধ্যে। একদিকে ধোঁয়াশার ঘনত্ব, অন্যদিকে বায়ুর গতিবেগ একেবারে মৃদু- যার ফলে দূষণ ফের লাফিয়ে বাড়ছে বলেই মনে করছে সিপিসিবি। বেশ কিছু অঞ্চলে দূষণের মাত্রা রয়েছে চারশোর আশপাশে। যাকে ঘিরে শঙ্কা বাড়ছে। বিভিন্ন অঞ্চলের একিউআই ‘ভেরি পুওর’ থেকে ‘সিভিয়ার’ ক্যাটেগরিতে পৌঁছেছে। ৩৯টি মনিটরিং স্টেশন থেকে গড় একিউআই ৩০৩ রেকর্ড করা হয়েছে, তবে ওয়াজিরপুর এবং আনন্দ বিহারের মতো এলাকাগুলিতে ‘সিভিয়ার’ একিউআই রিডিং পাওয়া গেছে। দীপাবলির পর থেকেই বিষাক্ত হয়ে উঠেছিল দিল্লির বাতাস। তাই ‘ক্লাউড সিডিং’-এর ব্যবস্থা করেছিল দিল্লি সরকার। মঙ্গলবার তার ট্রায়াল হয়। কিন্তু বৃষ্টি হয়েছে না হওয়ার মতো। পাশের রাজ্য হরিয়ানা ও পাঞ্জাবের খড় পোড়ানো, যানবাহনের নির্গমন, জলবায়ু পরিস্থিতি এবং নির্মাণ ও শিল্পকর্ম দিল্লির বায়ু দূষণের মূল কারণ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। বর্তমানে দিল্লির বায়ু দূষণ মোকাবিলার জন্য ‘গ্রেডেড রেসপন্স অ্যাকশন প্ল্যান’ -এর দ্বিতীয় স্তরের বিধিনিষেধ কার্যকর রয়েছে। এদিকে, নাগরিকদের স্বাস্থ্য রক্ষা এবং বায়ু মানের উন্নতির জন্য দিল্লির সরকার এবং কেন্দ্রীয় সরকারের দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার প্রয়োজনীয়তা পুনরায় উঠেছে।