বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই হৃদরোগে আকস্মিক আক্রান্তের ঘটনা ঘটে। সেই সময় জীবন বাঁচাতে একমাত্র উপায় হয়ে দাঁড়ায় কার্ডিওপালমোনারি রিসাসিটেশন বা সিপিআর। তবে সমস্যা হল, সিপিআরের তাত্ত্বিক জ্ঞান থাকা এবং তা বাস্তবে প্রয়োগ করার সক্ষমতার মধ্যে অনেক বড় ফারাক রয়েছে। সেই ফারাক দূর করতে এবার উচ্চ মাধ্যমিকের স্বাস্থ্য ও শারীরশিক্ষার সিলেবাসে অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে সিপিআর এবং জীবনরক্ষাকারী অন্য বিষয়ের পাঠ ।
শ্বাসনালিতে খাবার আটকে গেলে বা কেউ জলে ডুবে গেলে কীভাবে সেই খাদ্য বা জল বের করতে হবে এবং হৃদযন্ত্র সচল রাখতে হবে। সেই পদ্ধতিও এখন তৃতীয় সেমেস্টারের পাঠ্যক্রমে রাখা হয়েছে। বর্তমানের প্রতিবেদন অনুযায়ী, শিক্ষকরা বলছেন, কেবল বই পড়ার মাধ্যমে নয়, হাতেকলমে শিক্ষাই সবচেয়ে কার্যকর। অনেকেই আছেন যারা সিপিআর কর্মশালায় হাতেকলমে শেখা কৌশল ব্যবহার করে অনেকের জীবন বাঁচাতে সক্ষম হয়েছেন।সিলেবাস প্রণেতারা জানিয়েছেন, সিপিআরের প্রাথমিক ধারণা অষ্টম শ্রেণিতেও রয়েছে। কিন্তু কার্যকরভাবে প্রয়োগ করা ক্লাস এইটের শিক্ষার্থীর জন্য কঠিন, তাই উচ্চ মাধ্যমিকে তা বিস্তারিতভাবে অন্তর্ভুক্ত করা হলো।
পাঠ্যক্রম অনুযায়ী, কেউ অজ্ঞান হয়ে গেলে প্রথমে গলার পাশে ক্যারোটিড ধমনি চেপে দেখতে হবে, হৃদযন্ত্র সচল কি না। সচল থাকলে অল্প ধাক্কা দিয়ে জ্ঞান ফেরানোর চেষ্টা করতে হবে। যদি কাজ না হয়, আক্রান্তকে কাত করে শুইয়ে মুখে আটকে থাকা কোনও পদার্থ দ্রুত বের করতে হবে। এরপর দু’টি পাঁজরের সংযোগস্থলের দু’আঙুল নীচে তালুর শক্ত জায়গায় চাপ দিয়ে হৃদযন্ত্র সচল করতে হবে। দুই হাত একসঙ্গে ব্যবহার করে মিনিটে ১০০ বার এই চাপে যাওয়াই শিক্ষার্থীদের শিখানো হবে। প্রয়োজনে নাক চেপে মুখে-মুখ দিয়ে ফুঁ দেওয়ার কৌশলও ব্যবহারের নিয়ম শিখানো হবে। শিশুদের ক্ষেত্রে এই পদ্ধতি বিশেষভাবে কার্যকর।

সিপিআরের পাশাপাশি উচ্চ মাধ্যমিকে হেইমলিচ পদ্ধতিও শেখানো হবে। যখন শ্বাসনালিতে খাবার আটকে যায়, কথা বলা বন্ধ হয়ে যায়। আক্রান্ত ব্যক্তি হেইমলিচ সাইন দিয়ে সমস্যার ইঙ্গিত দিতে পারেন। শিক্ষার্থীরা শিখবে, আক্রান্তকে পিছন থেকে জড়িয়ে তাঁর পেটে পাঁচবার জোর চাপ দিলে খাবার বের হয়ে যেতে পারে। শিশুদের ক্ষেত্রে পিঠে জোরে চাপ দেওয়ার কৌশল প্রয়োগ করা হয়। এই নতুন সিলেবাস পরিবর্তন পড়ুয়াদের জীবনরক্ষাকারী কৌশল হাতে কলমে শেখার সুযোগ দেবে।