তরুণী চিকিৎসকের মৃত্যুতে তোলপাড় দেশ! বিস্ফোরক অভিযুক্তের বোন

Spread the love

মহারাষ্ট্রের সাতারায় মহিলা চিকিৎসক মৃত্যুতে নয়া মোড়। হাতের তালুতে যাঁদের নাম লিখে আত্মঘাতী হয়েছেন চিকিৎসক, তাঁদের দু’জনকেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ। যে বাড়িতে ওই চিকিৎসক ভাড়া থাকতেন, ঘটনাচক্রে সেই বাড়িওয়ালার পুত্র প্রশান্ত বাঙ্কার এই ঘটনার অন্যতম অভিযুক্ত। এই আবহে পাল্টা মুখ খুলেছে বাড়ি মালিকের পরিবার। পেশায় ইঞ্জিনিয়ার অভিযুক্ত ওই যুবকের বোন হিন্দুস্তান টাইমসকে জানিয়েছেন, প্রশান্ত বাঙ্কারকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিলেন মৃত চিকিৎসক। কিন্তু তা প্রত্যাখ্যান করেছিলেন তাঁর দাদা।

পুলিশ সূত্রে খবর, সাতরার ফালতানের সাব-ডিস্ট্রিক্ট হাসপাতালের মেডিক্যাল অফিসার হিসাবে কর্মরত ছিলেন ওই মহিলা চিকিৎসক। গত বৃহস্পতিবার গভীর রাতে ফালতানের একটি হোটেলের ঘরে বিড জেলার বাসিন্দা ওই চিকিৎসকের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। হাতের তালুতে পেনের দিয়ে লিখে গিয়েছিলেন, পুলিশ ইনস্পেক্টরের নাম। নাম ছিল আরও এক অভিযুক্তের। জানা যায়, গত পাঁচ মাস ধরে মহারাষ্ট্র পুলিশের ওই সাব-ইন্সপেক্টরের তাঁকে চার বার ধর্ষণ করেছেন। তিনি সাতারার যে বাড়িতে ভাড়া থাকতেন, সেই বাড়িমালিকের ইঞ্জিনিয়ার পুত্র তাঁকে মানসিক নির্যাতন করতেন। বাড়ির মালিকের ছেলে প্রশান্ত বাঙ্কার গ্রেফতার হয়েছেন আগেই। তার ঘণ্টাখানেক পর গ্রেফতার করা হয়েছে অভিযুক্ত পুলিশ ইন্সপেক্টর গোপাল বাদানে।

প্রশান্ত বাঙ্কারের পরিবারের চাঞ্চল্যকর দাবি

প্রশান্ত বাঙ্কারের বোন জানিয়েছেন, অক্টোবর মাসে তাঁর দাদাকে টেক্সট মেসেজের মাধ্যমে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিলেন ওই চিকিৎসক। কিন্তু তিনি রাজি হননি। প্রত্যাখান হওয়ার ক্ষোভ থেকেই হাতের তালুতে দাদার নাম লিখে রেখে গিয়েছেন, দাবি প্রশান্তর বোনের। তিনি আরও জানিয়েছেন, ‘ওই চিকিৎসক মাসিক চার হাজার টাকা ভাড়ায় গত এক বছর ধরে আমাদের বাড়িতে ছিলেন। গত মাসে আমার দাদা ফালতানে আসেন। কারণ ওঁর ডেঙ্গি হয়েছিল। সেই সময়ে ওই চিকিৎসক তাঁর চিকিৎসা করেছিলেন। তখনই ওঁরা একে অন্যের নম্বর নিয়েছিলেন। মৃত্যুর ১৫ দিন আগে ওই চিকিৎসক আমার দাদাকে বিয়ের প্রস্তাব দেন। কিন্তু দাদা তা গ্রহণ করেননি। দীপাবলির সময়েও ওই চিকিৎসককে উদ্বিগ্ন দেখাচ্ছিল। কিন্তু আমরা ভেবেছিলাম হয়তো কাজের চাপের জন্যই তিনি উদ্বেগে রয়েছেন।’ প্রশান্ত বাঙ্কারের বোন বলেন, আত্মঘাতী হওয়ার একদিন আগে, চিকিৎসক প্রশান্তকে বারবার ফোন করেছিলেন। সে সব রেকর্ড স্ক্রিনশট তাঁরা পুলিশকে দিয়েছেন বলেও জানিয়েছেন।

অন্যদিকে প্রশান্তর ভাই সুশান্ত জানিয়েছেন, এই দীপাবলিতেও তাঁদের সঙ্গেই উদযাপন করেছিলেন ওই চিকিৎসক। ভাইয়ের বিরুদ্ধে হেনস্থার অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন তিনিও। সুশান্ত বলেন, ‘যদি আমার ভাই তাঁকে হেনস্থা করে থাকে, তাহলে সে আমাদের পরিবারের সঙ্গে দীপাবলি কীভাবে উদযাপন করেছিল? আমাদের কাছে তার ছবিও আছে।’ সুশান্ত দাবি করেন যে তার ভাই তাকে বলেছিলেন যে ওই চিকিৎসক তাকে নিজের জীবন শেষ করে দেওয়ার হুমকিও দিয়েছিল। এদিকে মৃত চিকিৎসকের পরিবারের দাবি, চাপ দিয়ে নানা অনৈতিক কাজ করতে বাধ্য করা হত তরুণীকে। এমনকী, লিখিয়ে নেওয়া হত ভুয়ো মেডিক্যাল রিপোর্টও। মৃতার খুড়তুতো ভাইয়ের অভিযোগ, কোনও রকম শারীরিক পরীক্ষা ছাড়াই ওই সমস্ত রিপোর্ট লিখতে বাধ্য করা হত তরুণীকে। হুমকিও দেওয়া হত। একাধিকবার ডিএসপি-সহ পুলিশের উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের চিঠি লিখেছিলেন তিনি, কিন্তু লাভ হয়নি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *