অপারেশন সিঁদুরে ভারতীয় অস্ত্রের শক্তি দেখে মুগ্ধ ফ্রান্স। সূত্রের খবর, ভারতের থেকে ‘পিনাকা মাল্টি ব্যারেল রকেট লঞ্চার সিস্টেম’ কিনতে আগ্রহী ফ্রান্স। সেনা পর্যায়ে এই নিয়ে আলোচনা অনেক দূর এগিয়েছে। তবে চূড়ান্ত কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। এই সম্ভাব্য চুক্তি ভারতের প্রতিরক্ষা রফতানির ক্ষেত্রে একটি মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
‘এএনআই’কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এই ইস্যুতে মুখ খোলেন ফরাসি সেনাবাহিনীর এক শীর্ষ আধিকারিক। ব্রিগেডিয়ার জেনারেল পদমর্যাদার ওই ফৌজি অফিসারের নাম স্টিফেন রিচৌ। সাক্ষাৎকারে তিনিই প্রথম পিনাকার প্রসঙ্গ তোলেন। গত বছর নভেম্বরে বার্তা সংবাদ ‘এএনআই’কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এই ইস্যুতে মুখ খোলেন ফরাসি সেনাবাহিনীর এক শীর্ষ আধিকারিক। ব্রিগেডিয়ার জেনারেল পদমর্যাদার ওই সেনা অফিসারের নাম স্টিফেন রিচৌ। সাক্ষাৎকারে তিনিই প্রথম পিনাকার প্রসঙ্গ তোলেন। তিনি জানান,’আমাদের বড় সংখ্যায় মাল্টি ব্যারেল রকেট লঞ্চারের (এমবিআরএল) প্রয়োজন রয়েছে। ভারতের পিনাকা সেই জায়গাটা নিতেই পারে। এটা যথেষ্ট উন্নত ও ধ্বংসাত্মক একটা হাতিয়ার।’ স্টিফেন রিচৌ দাবি করেন, ‘পিনাকার মতো এমবিআরএল আরও বেশ কয়েকটি দেশ আমাদের বিক্রি করতে চায়। আমরা সমস্ত সিস্টেমগুলি খতিয়ে দেখছি। তবে পিনাকা বেশ উন্নত একটি হাতিয়ার। এটা বাহিনীতে শামিল করার জন্য আমরা যথেষ্ট আগ্রহী।’
ইকোনমিক টাইমসের এক প্রতিবেদন অনুসারে, দিল্লিতে আয়োজিত রাষ্ট্রসংঘের ট্রুপ কন্ট্রিবিউটিং কান্ট্রিজ চিফস কনক্লেভে যোগ দিয়েছিলেন ফরাসি সেনাবাহিনীর চিফ অব স্টাফ জেনারলে পিয়েরে শিল। ভারতের চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফকে তিনি বলেন, ভারতীয় সেনাবাহিনীর ব্যবহৃত অস্ত্র দেখতে আগ্রহী তিনি। কারণ, এটি সময় যখন ফরাসি সেনাবাহিনী তাদের নিজস্ব দূরপাল্লার আর্টিলারি সিস্টেম পুনর্নবীকরণ করছে। জেনারেল গিল বলেন, ‘অপারেশন সিঁদুরের সময় ভারতের অস্ত্র ব্যবস্থা, যার মধ্যে দূরপাল্লার সিস্টেম এবং ড্রোনের পারফরম্যান্স দেখে ফরাসি পক্ষ মুগ্ধ হয়েছে।’ ভারতীয় সেনাবাহিনী যে কোনও অপারেশনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে সক্ষম, সেই জন্য সিস্টেমগুলি নির্ভুলভাবে ব্যবহার হয়েছে। এবং অপারেশন সিঁদুরে আমরা যা দেখেছি তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’ তিনি সম্ভবত পিনাকা সিস্টেমের কথা উল্লেখ করেছেন, যা নিয়ে ফ্রান্স ইতিমধ্যেই আগ্রহ দেখিয়েছে। জেনারেল শিল বলেন, যদিও দুই দেশ যুদ্ধের সকল ক্ষেত্রে সহযোগিতা করতে পারে, বিশেষ করে আগ্রহের বিষয় হল দূরপাল্লার সিস্টেম। অন্যদিকে ভারতীয় সেনাবাহিনী এক্স বার্তায় জানিয়েছে, ‘দুই দেশের সেনাপ্রধান যৌথ প্রশিক্ষণ মহড়া, সন্ত্রাসবাদ বিরোধী সহযোগিতা এবং প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি সহযোগিতা সম্প্রসারণের বিষয়ে আলোচনার মাধ্যমে শক্তিশালী ভারত-ফ্রান্স কৌশলগত অংশীদারিত্ব পুনর্ব্যক্ত করেছেন। উভয় পক্ষই রাষ্ট্রসংঘের শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে আন্তঃকার্যক্ষমতা বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিয়েছেন।’

পিনাকা কী?
পিনাকা মাল্টি ব্যারেল রকেট লঞ্চার ৯০ কিলোমিটার পর্যন্ত নিখুঁতভাবে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করতে পারে। এর গতি ঘণ্টায় ৫৮০০ কিমি। বিশেষ বিষয় হল এটি বন্ধ করা বেশ চ্যালেঞ্জিং। এই অস্ত্র ব্যবস্থা স্থল বাহিনীকে শত্রু অঞ্চলে আক্রমণ করার বিকল্প দেয়। এটি ঐতিহ্যগতভাবে গতিশীলতার জন্য ট্রাকে মাউন্ট করা হয়। পিনাকা রকেট ব্যবস্থাকে আরও দীর্ঘ পাল্লা দিয়ে উন্নত করা হচ্ছে। ভারতীয় সেনাবাহিনী এটি ব্যবহার করে। এটি ১৯৯৯ সালের কার্গিল যুদ্ধের সময়ও মোতায়েন করা হয়েছিল।