ফের তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব! ঝড়ল রক্ত বোমা বিস্ফোরণে জখম বধূ-সহ ২

Spread the love

আবারও তৃণমূলের অন্তর্দ্বন্দ্বে রক্ত ঝরল কোচবিহারে। সোমবার সকালে কোচবিহার-১ ব্লকের শুকটাবাড়িতে গোষ্ঠীকোন্দল ঘিরে তীব্র বোমাবাজিতে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এলাকা। ঘটনায় জখম হয়েছেন স্থানীয় এক গৃহবধূ ও তৃণমূলের প্রাক্তন অঞ্চল সভাপতির এক আত্মীয়। দু’জনকেই গুরুতর অবস্থায় ভর্তি করা হয়েছে কোচবিহার মেডিক্যাল কলেজে। ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে জেলাজুড়ে। ইতিমধ্যে পুলিশ আটক করেছে প্রাক্তন অঞ্চল সভাপতির ছেলে রাশেদ হককে। অন্যদিকে, ঘটনাটি নিয়ে মুখ খুলে গোষ্ঠীকোন্দলের কথা স্বীকার করেছেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী তথা বিধায়ক উদয়ন গুহ।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার রাত থেকেই এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়। গোষ্ঠীকোন্দলের সূত্রপাত তৃণমূলের প্রাক্তন অঞ্চল সভাপতি সিরাজুল হকের অনুগামী ও জেলা সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিকের গোষ্ঠীর মধ্যে। রাতভর দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ, বোমাবাজি এবং তীব্র গালিগালাজ চলে। পরিস্থিতি সামলাতে সোমবার ভোরেই মোতায়েন করা হয় অতিরিক্ত পুলিশবাহিনী। কিন্তু সকাল হতে না হতেই ফের বোমা বিস্ফোরণ ঘটে, তাতে জখম হন স্থানীয় মহিলা নুরনাহার বেগম। পরিবারের অভিযোগ, তিনি বাড়ির গেটের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন, হঠাৎই রাস্তায় ছোঁড়া একটি বোমা গিয়ে ফেটে পড়ে তাঁর কাছে। গুরুতর জখম অবস্থায় তাঁকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এর কিছুক্ষণ পরই আরেকটি ঘটনায় আহত হন এন্তাজুল হক নামে এক ব্যক্তি। স্থানীয়দের দাবি, তিনি রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত নন। সকালবেলায় বাজারে বেরোতেই এক গোষ্ঠীর কর্মীরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাঁর মাথা ও হাতে আঘাত করে। রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁকেও ভর্তি করা হয়েছে কোচবিহার মেডিক্যালে। তাঁর স্ত্রী সাজেনা খাতুন জানান, তাঁর স্বামী ভুটানে কাজ করতেন, কিছুদিন আগে বাড়িতে ফিরেছেন। রাজনীতির সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই। কিন্তু বিনা কারণে হামলার শিকার হয়েছেন।

ঘটনার পর থেকেই এলাকায় তীব্র উত্তেজনা। আহতের পরিজনেরা অভিযোগ তুলেছেন, জেলা সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিকের অনুগামীরাই বোমাবাজির মূল হোতা। পাল্টা সিরাজুল হকের ছেলে রাশেদ হক দাবি করেছেন, অভিজিৎ দে ভৌমিকের নেতৃত্বে রবিবার রাত থেকে হামলা চলছে। যারা সন্ত্রাস ছড়াচ্ছে, তারাই বিভিন্ন পদে বসে আছে। পুলিশ জানিয়েছে, দু’পক্ষের অভিযোগই নথিভুক্ত করা হয়েছে এবং ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। এলাকাজুড়ে টহল দিচ্ছে বিশাল পুলিশবাহিনী।

এনিয়ে উদয়ন গুহ বলেছেন, জেলার কিছু নেতার উস্কানিতে এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। যারা দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে, তাদের চিহ্নিত করে বহিষ্কার করা উচিত। এদিকে, বিজেপি তীব্র কটাক্ষ করেছে তৃণমূলকে। তাঁদের বক্তব্য, তৃণমূলের জেলা সভাপতির নেতৃত্বে যখন এলাকায় বোমা ফাটছে, তখন প্রশাসন নিশ্চুপ। তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে আজ সাধারণ মানুষ আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *