বছর ঘুরতেই সামনে বিধানসভা নির্বাচন, আর তার আগেই যেন নিজের ছন্দে ফিরতে শুরু করেছেন বীরভূমের প্রভাবশালী তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডল। রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, ভোটের আগে রাজ্যের হাওয়া গরম করতে ফের সক্রিয় হয়ে উঠেছেন কেষ্ট। জেল-জামিন, সংগঠনে বদল, বিতর্ক সবকিছু ছাপিয়ে ফের সংবাদশিরোনামে তিনি। আর সেই প্রত্যাবর্তনের মঞ্চ এবার একটি ফুটবল খেলার মাঠ।
রবিবার সাঁইথিয়ার মাঠপলসা গ্রামে আয়োজিত হয়েছিল একটি ফুটবল টুর্নামেন্ট। উপস্থিত ছিলেন অনুব্রত মণ্ডলও। মাঠেই তাঁর স্বভাবসুলভ ভঙ্গিতে ‘খেলার’ বার্তা দেন। তিনি বলেন, ৩৪ বছর ধরে এইসব খেলাধুলো বন্ধ ছিল। দিদির সরকার আসার পর খেলা আবার শুরু হয়েছে। ছাব্বিশের নির্বাচন তার আগেই গোটা বাংলায় খেলা হবে। তিনি বলেন, ‘আপনারা খেলবেন, আমরাও খেলব। হারব না, জিতব।’
কেষ্টর এই বার্তার পালটা শানিয়েছেন বিজেপির বোলপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি শ্যামাপদ মণ্ডল। তাঁর কটাক্ষ, উনি এমন খেলা খেললেন যে নিজে তো জেলে গেলেনই, মেয়েকেও টেনে নিয়ে গেলেন। মানুষ এখন অনেক সচেতন। বেশি খেলা খেলতে গেলেই উল্টো ফল হবে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, অনুব্রত এই মন্তব্যের মাধ্যমে ইঙ্গিত দিলেন, তিনি মাঠ ছাড়তে রাজি নন, বরং ফের রাজনীতির মূলধারায় নিজের উপস্থিতি জানান দিতে চাইছেন।
উল্লেখ্য, জেল থেকে মুক্তির পর রাজনীতিতে তাঁর প্রাসঙ্গিকতা কিছুটা কমে গিয়েছিল। জেলা সভাপতি পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার পর অনেকেই ধরে নিয়েছিলেন, বীরভূমে এবার কেষ্টর দাপট কমে গিয়েছে। তৃণমূলের বিভিন্ন কর্মসূচি ও বড় মিটিংয়ে তাঁর অনুপস্থিতি সেই জল্পনাকে আরও উসকে দিয়েছিল। বোলপুরের আইসি-কে অশালীন ভাষায় গালমন্দ করে পরে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়া, ২১ জুলাইয়ের ধর্মতলা সভায় আড়ালে থাকা, সব মিলিয়ে তাঁর রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে চলছিল তীব্র গুঞ্জন। তবে পরিস্থিতি বড় দ্রুত বদলেছে। সম্প্রতি তৃণমূল তাঁকে বীরভূম কোর কমিটির আহ্বায়ক পদে বসিয়েছে। এই দায়িত্ব পাওয়ার পর ফের জেলার রাজনীতিতে নিজ চরিত্রে ফিরে এসেছেন অনুব্রত।
