Indian Army Kirti Chakra: বিয়ের ৪ মাস পরেই মৃত্যু, সম্মানগ্রহণ সেনা ক্যাপ্টেনের স্ত্রী’র

Spread the love

বাকরুদ্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে আছেন মা ও স্ত্রী। তাঁদের হাতে মরণোত্তর কীর্তি চক্র প্রদানের আগে রাষ্ট্রপতি ভবনের সঞ্চালক যখন ক্যাপ্টেন অংশুমান সিংয়ের বীরত্বের কাহিনি বর্ণনা করছেন, তখন তাঁদের কানে আদৌও সেই কথাগুলো আসছিল কিনা, কে জানে। হয়ত আসছিল না। হয়ত আসছিল। সঞ্চালকের কথা শেষ হওয়ার পরে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু(Draupadi Murmu) যখন তাঁদের হাতে মরণোত্তর কীর্তি চক্রের স্মারক তুলে দিচ্ছিলেন, তখন মাথা নীচু করে তা গ্রহণ করছিলেন। কোনও কথা বলেননি। হয়ত বলতে পারেননি। পরে ক্যাপ্টেন অংশুমানের স্ত্রী’র কাঁধে হাত দিয়ে তাঁর সঙ্গে কিছু কথা বলতে শুরু করেন রাষ্ট্রপতি, তখন তিনিও উত্তর দেন। হাতজোড় করে রাষ্ট্রপতিকে প্রণাম জানান ক্যাপ্টেন অংশুমানের মা।

প্রয়াত ক্যাপ্টেন অংশুমান সিং

সিয়াচেন হিমবাহে মোতায়েন ছিলেন ভারতীয় সেনার মেডিক্যাল কোরের পঞ্জাব রেজিমেন্টের ২৬ ব্যাটেলিয়নের ক্যাপ্টেন অংশুমান। যিনি পুণের আর্মড ফোর্সের মেডিক্যাল কলেজ থেকে এমএমবিএস স্তরের পড়াশোনা শেষ করেছিলেন। তারপর আগ্রায় ইন্টার্নশিপ করেছিলেন। আর প্রথম ফিল্ড পোস্টিং হিসেবে সিয়াচেনে পাঠানো হয়েছিল তাঁকে। সেখানেই গত বছর জুলাইয়ে গোলাগুলি রাখার একটি জায়গায় আগুন লেগে গিয়েছিল। সেইসময় সহকর্মীদের উদ্ধার করতে গিয়ে মৃত্যু হয় ক্যাপ্টেন অংশুমানের।

পরিবারের সবথেকে ছোট সন্তান ছিলেন ক্যাপ্টেন অংশুমান

পরিবারের সবথেকে ছোট ছিলেন ক্যাপ্টেন অংশুমান। ২০২৩ সালের জুলাইয়ে যখন প্রয়াত হয়েছিলেন, তখন ক্যাপ্টেন অংশুমানের বয়স ছিল ২৬। চার মাস আগেই তাঁর বিয়ে হয়েছিল। ২০২৩ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি বিয়ে করেছিলেন ক্যাপ্টেন অংশুমান। তাঁর স্ত্রী সৃষ্টি পেশায় ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন। যিনি নয়াদিল্লিতে একটি বহুজাতিক সংস্থায় কাজ করতেন। আজ ক্যাপ্টেন অংশুমানের মরণোত্তর কীর্তি চক্র গ্রহণ করেন তাঁর মা মঞ্জুদেবী এবং স্ত্রী সৃষ্টি।

আবেগতাড়িত রাজনাথ

ক্যাপ্টেন অংশুমানের স্ত্রী এবং মা যখন কীর্তি চক্র গ্রহণের জন্য দাঁড়িয়েছিলেন, তখন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন। মুখ কিছু না বললেও তাঁর চোখেমুখে সেই ছাপ ছিল। এক নেটিজেন বলেন, ‘এই ভিডিয়োটা দেখতে এলেই একটা মনখারাপ ধাক্কা দিয়ে যাচ্ছে। ওঁনার পরিবারের সদস্য, স্ত্রী এবং মায়েদের যে পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যেতে হচ্ছে, তা ভাবা যায় না। প্রয়াত ক্যাপ্টেন অংশুমান সিংয়ের আত্মার শান্তি কামনা করি।’ অপর একজন বলেন, ‘এত কম বয়সের যুবতীকে দেখে রাজনাথ সিংও আবেগপ্রণ হয়ে পড়েছেন।’

পরবর্তীতে উত্তরপ্রদেশের ভাগলপুরে তাঁর পৈতৃক গ্রামে শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছিল। প্রয়াত ক্যাপ্টেনকে শেষবারের মতো শ্রদ্ধা জানাতে অসংখ্য মানুষ এসেছিলেন। উত্তরপ্রদেশের একাধিক মন্ত্রী, জেলাশাসক, পুলিশ সুপারও উপস্থিত ছিলেন। পঞ্চায়েত প্রধান সিদ্ধার্থকুমার মাহাত জানিয়েছিলেন যে গ্রামের বীর সন্তান অংশুমানের প্রয়াণে শোকস্তব্ধ হয়ে গিয়েছেন স্থানীয় মানুষরা। ক্যাপ্টেন অংশুমান যে বীরত্বের পরিচয় দিয়েছেন, তা চিরকাল স্মরণীয় হয়ে থাকবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *