রাশিয়ার থেকে ভারত তেল কিনছিল বলে রেগে ছিল আমেরিকা। এর জেরে ভারতের ওপর অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক পর্যন্ত চাপিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। সেই আমেরিকা থেকেই নাকি ভারত এবার রেকর্ড পরিমাণ তেল কিনেছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২২ সালের অক্টোবরের পর থেকে সর্বোচ্চ স্তরে পৌঁছে গিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে ভারতের অপরিশোধিত তেল আমদানি। এর ফলে নিষেধাজ্ঞার কবলে থাকা রাশিয়ার তেলের উপর নির্ভরতা কমাতে সক্ষম হয়েছে ভারত। এরই পাশাপাশি আমেরিকার সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি চূড়ান্ত করারও পথ সুগম করছে ভারত। অবশ্য আমেরিকার থেকে তেল কেনা বাড়ালেও রাশিয়ার সঙ্গ ছাড়েনি ভারত। এখনও রাশিয়া থেকেই সর্বোচ্চ পরিমাণ তেল কিনে চলেছে ভারতের শোধনাগারগুলি। উল্লেখ্য, এর আগে ট্রাম্প বড় গলায় দাবি করেছিলেন, রাশিয়ার থেকে তেল কেনা বন্ধ করে দেবে ভারত। তবে ভারত স্পষ্ট করে দেয়, যেখান থেকে তারা সস্তায় তেল পাবে, জ্বালানি সুরক্ষার কথা মাথায় রেখে সেখান থেকেই তারা তেল কিনবে।
এনার্জি কনসালটিং কোম্পানি কেপলারের তথ্য অনুসারে, ২৭ অক্টোবর পর্যন্ত ভারত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রতিদিন ৫.৪ লক্ষ ব্যারেল অপরিশোধিত তেল আমদানি করেছে, যা ২০২২ সালের পর থেকে সর্বোচ্চ। এই মাসের শেষের দিকে, এই সংখ্যাটি দৈনিক ৫.৭৫ লক্ষ ব্যারেলে পৌঁছবে বলে মনে করা হচ্ছে। এদিকে নভেম্বরের বুকিং দৈনিক ৪ থেকে ৪.৫ লক্ষ ব্যারেলের মধ্যে থাকতে পারে।
কেপলারের প্রধান গবেষণা বিশ্লেষক (রিফাইনিং, সাপ্লাই অ্যান্ড মডেলিং) সুমিত রিতোলিয়া বলেন, মূলত অর্থনৈতিক কারণেই মার্কিন তেল আমদানি বৃদ্ধি করেছে ভারত। প্রকৃতপক্ষে, ব্রেন্ট এবং ডব্লিউটিআই অপরিশোধিত তেলের দামের মধ্যে ক্রমবর্ধমান ব্যবধান, মার্কিন তেলের কম দাম এবং চিনের চাহিদা কমে যাওয়ার কারণে ভারতীয় শোধনাগারগুলি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে তেল কিনছে। তবে, রাশিয়া ভারতের বৃহত্তম তেল সরবরাহকারী হিসাবে রয়ে গিয়েছে এখনও। ভারতের মোট আমদানির প্রায় এক-তৃতীয়াংশ এখনও রাশিয়া থেকে আসছে। এর পরে ইরাক থেকে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ তেল কিনছে ভারত। এরপর তালিকায় আছে সৌদি আরব।

সরকারি ও তেল শিল্প সূত্র জানিয়েছে, ভারতীয় তেল শোধনাগারগুলি সাম্প্রতিক মাসগুলিতে ইউএস মিডল্যান্ড ডাব্লুটিআই এবং মার্স গ্রেড অপরিশোধিত তেলের ক্রয় বাড়িয়েছে। এর লক্ষ্য সরবরাহের উৎসকে বৈচিত্র্যময় করা এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে সহযোগিতার সঙ্কেত দেওয়া। এই পরিবর্তন এমন এক সময়ে এসেছে যখন রাশিয়ার তেল কোম্পানি রোসনেফ্ট এবং লুকঅয়েলের উপর পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা কঠোর হয়েছে। অবশ্য ভারতের তেল শোধনাগারগুলি এখনও এই সংস্থাগুলি থেকে তেল কিনে চলেছে।