পাহাড়ি পথ আবার কেড়ে নিল প্রাণ। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে দার্জিলিংয়ের সোনাদা ব্লকের গোরাবাড়ির কাছে গুড্ডিরোডে ১১০ নম্বর জাতীয় সড়কে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গভীর খাদে পড়ে যায় একটি যাত্রীবাহী গাড়ি। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় গাড়ির চালক ও এক যাত্রীর। আহত হয়েছেন আরও ছয়জন। রাতের অন্ধকারে ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়তেই চাঞ্চল্য ছড়ায় গোটা শৈলশহরে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শিলিগুড়ি থেকে দার্জিলিং যাচ্ছিল গাড়িটি। তাতে চালক-সহ মোট আটজন যাত্রী ছিলেন। হঠাৎ বাঁক নেওয়ার সময় গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে প্রায় ১৫০ ফুট গভীর খাদে গড়িয়ে পড়ে। দুর্ঘটনার সঙ্গে সঙ্গেই স্থানীয়রা উদ্ধারকাজ শুরু করেন এবং খবর দেন পুলিশ ও দমকলকে। জোরবাংলো ও সোনাদা থানার পুলিশ, দমকল বাহিনী ও বিপর্যয় মোকাবিলা দলের সদস্যরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার অভিযানে নামে। পাহাড়ের আঁকাবাঁকা পথে খাদে পড়ে থাকা গাড়ি থেকে একে একে বের করে আনা হয় যাত্রীদের। প্রথমে সবাইকে সোনাদা ব্লক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকরা দুইজনকে মৃত ঘোষণা করেন। মৃতদের মধ্যে রয়েছেন গুড্ডিরোডের বাসিন্দা গাড়িচালক অরুণ মুখিয়া এবং দার্জিলিংয়ের জেপি শর্মা রোডের অভিমন্যু প্রসাদ। গুরুতর আহত তিনজন সৌরভ প্রসাদ, অরুণ প্রসাদ ও অমিত প্রসাদকে পরবর্তীতে দার্জিলিং সদর হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। আহতদের মধ্যে আরও রয়েছেন চন্দন শাহ, শরণ মুখিয়া ও মীনা মুখিয়া এঁরা সকলেই সোনাদার বাসিন্দা।
দার্জিলিং জেলা পুলিশ সুপার প্রবীন প্রকাশ জানিয়েছেন, নিহত ও আহতরা সকলে স্থানীয় নিত্যযাত্রী। গাড়িতে কোনও পর্যটক ছিলেন না। প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাড়িটি খাদে পড়ে যায়। দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

এদিকে দুর্ঘটনার খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পৌঁছন জিটিএ-র ডেপুটি চেয়ারম্যান রাজেশ চৌহান ও কর্মাধ্যক্ষ বাবিন্দ্র রাই। রাজেশ চৌহান বলেন, সোনাদার কাছে জাতীয় সড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। দু’জনের মৃত্যু হয়েছে, আহত ছয়জনের মধ্যে একজন মহিলা। তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক, তাঁদের দার্জিলিং সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। উল্লেখ্য, গত ১৫ দিনের মধ্যেই দার্জিলিং ও আশপাশের পাহাড়ি পথে এটি তৃতীয় বড় দুর্ঘটনা। ১৮ অক্টোবর পাঙখাবাড়ির তিনঘুমটিতে খাদে পড়ে মৃত্যু হয়েছিল নকশালবাড়ির দুই যুবকের। আর ২২ অক্টোবর মিরিকের পুটুংয়ে খাদে পড়ে প্রাণ যায় চারজনের, যাঁদের মধ্যে তিনজন ছিলেন নেপালের নাগরিক। অর্থাৎ মাত্র দুই সপ্তাহে পাহাড়ি সড়কে প্রাণ হারিয়েছেন আটজন, আহত হয়েছেন অন্তত ২১ জন।