আলিপুরদুয়ারের যশোডাঙা এলাকায় ধর্ষণ। অভিযোগ, এক আদিবাসী গৃহবধূকে ধর্ষণ করে সেই জঘন্য ঘটনার ভিডিয়ো নিজের মোবাইল ফোনে রেকর্ডিং করেছিল প্রতিবেশী যুবক মহেন্দ্র চৌধুরী। ঘটনার প্রতিবাদ করতেই গৃহবধূর ওপর নেমে আসে নির্মম মারধর। ইতিমধ্যেই শামুকতলা থানার পুলিশ অভিযুক্ত মহেন্দ্র চৌধুরীকে গ্রেফতার করেছে। ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে গোটা আলিপুরদুয়ার ২ ব্লকজুড়ে।
ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার গভীর রাতে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, রাত সাড়ে এগারোটা নাগাদ যখন ঘরে একাই ছিলেন ওই গৃহবধূ, তখনই সেখানে ঢুকে পড়ে মহেন্দ্র। জোর করে ধর্ষণের পর মোবাইল ক্যামেরায় পুরো ঘটনাটি রেকর্ড করে বলে অভিযোগ। ওই সময় চিৎকার করলে অভিযুক্ত তাকে প্রচণ্ড মারধর করে। মাথা ও চোখের নিচে গুরুতর আঘাত পেয়েছেন তিনি। প্রথমে তাঁকে যশোডাঙা ব্লক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়, কিন্তু অবস্থার অবনতি হওয়ায় পরে তাঁকে আলিপুরদুয়ার জেলা সদর হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়।
নিগৃহীতার বাবা শামুকতলা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। তাঁর অভিযোগ, অভিযুক্ত মহেন্দ্র চৌধুরী স্থানীয় বিজেপির সঙ্গে যুক্ত। তাঁর দাবি, ওই যুবক বিজেপির সক্রিয় কর্মী। রাজনৈতিক দাপটেই এমন কাজ করেছে। ওই আদিবাসী পরিবারের কর্তা আরও জানিয়েছেন, কিছুদিন আগেই মেয়ের বিয়ের জন্য তিনি নিজের জমি বিক্রি করেছিলেন। অভিযোগ, সেই জমি নিজের নামে করে নিতে চাপ দিয়েছিল মহেন্দ্র। তিনি রাজি না হওয়ায় প্রতিশোধ নিতেই মেয়েকে নৃশংসভাবে নির্যাতন করেছে অভিযুক্ত।অন্যদিকে, অভিযুক্তের বাবার দাবি সম্পূর্ণ উল্টো। তিনি বলেছেন, তাঁকে থানার পক্ষ থেকে জানানো হয় আমার ছেলে নাকি মেয়েটিকে মেরেছে। ধর্ষণের কোনও ঘটনা জানেন না। জমি নিয়ে ওদের মধ্যে একটা ঝামেলা চলছিল, এর বাইরে কিছু বলার নেই।

হাসপাতাল থেকেই নির্যাতিতা গৃহবধূ বলেন, অভিযুক্তের কঠোর শাস্তি চাই। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগ পাওয়ার পরই দ্রুত অভিযানে নামে শামুকতলা থানার আধিকারিকরা। প্রযুক্তিগত তথ্য ও স্থানীয় সূত্রের ভিত্তিতে মহেন্দ্র চৌধুরীকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় এবং পরে গ্রেফতার করা হয়। ধৃতকে শনিবার আলিপুরদুয়ার আদালতে তোলা হবে। এই ঘটনায় এলাকায় তীব্র উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা দোষীর কঠোর শাস্তির দাবি তুলেছেন। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার সমস্ত দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। নির্যাতিতার মেডিক্যাল রিপোর্ট হাতে এলেই মামলার পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।