দুর্গাপুরে ডাক্তারি ছাত্রীকে গণধর্ষণের যে অভিযোগ উঠেছে, তা নিয়ে কঠোর পদক্ষেপের নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রবিবার উত্তরবঙ্গে যাওয়ার আগে কলকাতা বিমানবন্দরে মুখ্যমন্ত্রী জানান, পুরো বিষয়টির তদন্ত করা হচ্ছে। কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সেইসঙ্গে প্রশ্ন তোলেন, অত রাতে কীভাবে বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজের ক্যাম্পাসের বাইরে গেলেন ডাক্তারি ছাত্রী? অত রাতে তাঁকে বেরোতে দেওয়া হল কেন? যাঁরা ভিনরাজ্য থেকে আসেন, তাঁদের উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রী জানান, বিশেষত মেয়েদের অত রাতে বাইরে বেরোতে দেওয়া উচিত নয়। নিজেদের সুরক্ষিত রাখা উচিত বলেও দাবি করেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি ওড়িশা-সহ অন্যান্য বিজেপি-শাসিত রাজ্যে ধর্ষণের যে অভিযোগ ওঠে, তা নিয়েও আক্রমণ শানান। তিনি দাবি করেন, অন্য রাজ্যে কোনওরকম শাস্তি হয় না। পশ্চিমবঙ্গে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
আর মুখ্যমন্ত্রীর সেই মন্তব্য নিয়ে তুমুল বিতর্ক শুরু হয়েছে। বঙ্গ বিজেপির রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য। তিনি দাবি করেছেন, মুখ্যমন্ত্রী আসলে বলে দিলেন যে পশ্চিমবঙ্গে সন্ধ্যায় মেয়েরা বাড়ির বাইরে বেরোবেন না। মুখ্যমন্ত্রীর পদে বসে থাকার কোনও অধিকার নেই মমতার। রাজ্যে আইন-শৃঙ্খলা ব্যবস্থা বলে কিছু নেই। একইসুরে সিপিআইএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী দাবি করেছেন, মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্টত বলে দিলেন যে কলকাতা বা দুর্গাপুর মোটেও সুরক্ষিত নয়।
উল্লেখ্য, নির্যাতিতা তরুণী ওড়িশার জলেশ্বরের বাসিন্দা। তরুণীর পরিবার জানিয়েছে, গত ১০ অক্টোবর রাত সাড়ে আটটা নাগাদ ওই পড়ুয়া সহপাঠীদের সঙ্গে কলেজের বাইরে খেতে বেরিয়েছিলেন। সেই সময় কয়েকজন যুবক ওই তরুণীর পথ আটকায় এবং জোর করে হাসপাতালের পিছনের দিকে থাকা একটি জঙ্গলে নিয়ে যায়। এদিকে দুষ্কৃতীদের তাড়া খেয়ে তরুণীর সঙ্গে থাকা বন্ধুটি পালিয়ে যান বলে জানা যায়। এদিকে গণধর্ষণ করার পর ডাক্তারি পড়ুয়ার মোবাইলটি ছিনিয়ে নেয় দুষ্কৃতীরা।

জানা গিয়েছে, প্রথমে তিনজন এসে নির্যাতিতার পথ আটকেছিল এবং দুর্ব্যবহার শুরু করেছিল। পরে ঘটনাস্থলে আরও দু’জন আসে। জানা যাচ্ছে, পরে যে দু’জন এসেছিল, তাদের ফোন থেকে নির্যাতিতা নিজের ফোনে কল করেছিলেন। এই আবহে যে ব্যক্তির ফোন থেকে নির্যাতিতা নিজের নম্বরে ফোন করেছিলেন, সেই ব্যক্তিকে প্রথমে জেরা করে পুলিশ। তার থেকেই বাকি অভিযুক্তদের পরিচয় জানতে পারে পুলিশ। এই ঘটনায় এখনও দুই অভিযুক্ত পলাতক। তাদের খোঁজে জঙ্গলের ভিতরে সাইকেল-বাইক নিয়ে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ। ড্রোন উড়িয়েও নজরদারি চালানো হচ্ছে।