দু’বছর ধরে উপাচার্যহীন উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়

Spread the love

দু’বছর কেটে গিয়েছে, কিন্তু এখনও স্থায়ী উপাচার্য পায়নি উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়। রাজ্যের অন্যতম প্রাচীন ও গুরুত্বপূর্ণ এই উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান কার্যত চলছে রেজিস্ট্রারের হাত ধরে। বুধবার রাজ্যের ছ’টি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগের ঘোষণা হলেও সেই তালিকায় উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম না থাকায় ফের ক্ষোভে ফুঁসছে শিক্ষক-শিক্ষার্থী মহল। উত্তরবঙ্গের শিক্ষা মহলে প্রশ্ন উঠছে কেন এখনও এই ঐতিহ্যবাহী বিশ্ববিদ্যালয়টি উপাচার্যহীন রয়ে গেল?প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে এসএসসি শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে নাম জড়ানোয় তৎকালীন উপাচার্য সুবীরেশ ভট্টাচার্যকে গ্রেফতার করে কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা। তারপর থেকেই উপাচার্যবিহীন অবস্থায় চলছে বিশ্ববিদ্যালয়। মাঝে অস্থায়ীভাবে কয়েকজন দায়িত্ব নিলেও, তা টেকেনি বেশিদিন। শেষ অস্থায়ী উপাচার্য ওমপ্রকাশ মিশ্রর মেয়াদ শেষ হয় ২০২৩ সালে। এরপর থেকে পুরো প্রশাসনিক দায়িত্ব সামলাচ্ছেন ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ভাস্কর বিশ্বাস। দীর্ঘদিন ধরে স্থায়ী নেতৃত্বের অভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কাজ থেকে শুরু করে শিক্ষাগত পরিবেশ সবই প্রভাবিত হচ্ছে বলে অভিযোগ শিক্ষক ও কর্মীদের। বহুদিন ধরে জমে থাকা ফাইল, বিভাগীয় সিদ্ধান্তে দেরি এবং গবেষণার কাজ ব্যাহত হওয়ায় অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে দাবি পড়ুয়া মহলের।

এদিকে, সম্প্রতি গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়সহ রাজ্যের আরও পাঁচটি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগের ঘোষণার পর উত্তরবঙ্গে ক্ষোভ আরও বেড়েছে। অনেকে মনে করছেন, উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি সরকারের এই দীর্ঘ উদাসীনতা উত্তরাঞ্চলের শিক্ষাক্ষেত্রকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ভাস্কর বিশ্বাস বলেন, আশা করা হচ্ছে খুব শীঘ্রই আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী উপাচার্য নিযুক্ত হবেন। স্থায়ী নেতৃত্ব এলে কাজ অনেক বেশি কার্যকরভাবে সম্পন্ন করা সম্ভব হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন রেজিস্ট্রার তাপস চট্টোপাধ্যায়ের কথায়, আগামী মাসের গোড়ার দিকেই উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের নাম ঘোষণা করা হতে পারে।

অখিল ভারতীয় শৈক্ষিক মহাসঙ্ঘের স্থানীয় শাখার নেতা অর্ধেন্দু মণ্ডল বলেন, গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যের নাম ঘোষণা হয়েছে, এটা ইতিবাচক পদক্ষেপ। তবে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রেও একই সিদ্ধান্ত দ্রুত নেওয়া হোক। বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী সমিতির সাধারণ সম্পাদক সুমন বন্দ্যোপাধ্যায়ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তাঁর কথায়, বিশ্ববিদ্যালয় এতদিন অভিভাবকহীনভাবে চলেছে, এমন নজির নেই। খুব দ্রুত এই অনিশ্চয়তার অবসান হওয়া দরকার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *