দীর্ঘদিন ধরে বাম রাজনীতির প্রতীক হিসেবে পরিচিত যাদবপুরে এবার বড় ধাক্কা সিপিআই(এম)-এর। একসময়ের বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের নির্বাচনী আসন, যেখানে সংগঠনের ভিত ছিল দৃঢ়, সেখানে এবার নেতৃত্বের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফেটে পড়লেন দলীয় কর্মীরা। দক্ষিণ যাদবপুর ১ নম্বর এরিয়া কমিটির অধীনস্থ ৬৫ জন সদস্য একযোগে ইস্তফা দিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন কয়েকজন এরিয়া কমিটির পদাধিকারীও।
দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত কয়েক মাস ধরে এরিয়া কমিটির সম্পাদক রোশন মণ্ডলের কাজের ধরন নিয়ে ক্ষোভ দানা বাঁধছিল নেতা-কর্মীদের একাংশে। অভিযোগ, তিনি সংগঠন চালাচ্ছিলেন একনায়কতান্ত্রিক ভঙ্গিতে। সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছিল গোষ্ঠীবাদী মানসিকতায়, যেখানে মতামতের জায়গা প্রায় ছিল না। স্বজনপোষণ, পক্ষপাত ও ব্যক্তিগত আনুগত্যের রাজনীতি নাকি দলে জাঁকিয়ে বসেছিল। পরিস্থিতি চূড়ান্ত আকার নেয় এক যুব নেতাকে বহিষ্কারের ঘটনায়। অভিযোগ, ওই নেতাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়েই দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। ক্ষুব্ধ সদস্যরা দাবি করছেন, এই সিদ্ধান্তের পেছনে ব্যক্তিগত আক্রোশই কাজ করেছে। পুরো ঘটনায় নেপথ্য ভূমিকা রয়েছে রাজ্য কমিটির আমন্ত্রিত সদস্য হিমঘ্নরাজ ভট্টাচার্যের।

২২ অক্টোবর দলীয় যুব সংগঠনের লোকাল কমিটির সম্মেলনে আগুনে ঘি পড়ে। অভিযোগ, নতুন কমিটি গঠনের বৈঠকের সময় এক বর্ষীয়ান নেতা লোহার রড নিয়ে হামলা চালান এক যুব নেতার ওপর। মুহূর্তে মঞ্চ পরিণত হয় রণক্ষেত্রে। ওই ঘটনার পর থেকেই সংগঠনের ভেতর ক্ষোভ আরও তীব্র হয়। শেষ পর্যন্ত ৩০ অক্টোবর একযোগে পদত্যাগ করেন ৬৫ জন সদস্য। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন এরিয়া কমিটির সদস্য জয়ন্ত মুখোপাধ্যায়, কিশোর দাশগুপ্ত ও কৌশিক ঘোষও। জেলা সম্পাদক রতন বাগচি জানিয়েছেন, এই বিষয়ে এখনও কোনও আনুষ্ঠানিক খবর তাঁর কাছে আসেনি।